চার কোণে চারটি কলাগাছ, মাঝে একটি ঘট। আর তাতে সিঁদুর দেওয়া। চারপাশে আঁকা হয়েছে আলপনা। বরণডালায় রয়েছে প্রদীপ, ফুল, ধান-দুর্বা। এভাবেই সাজানো হয়েছে ছাদনাতলা।
পুরোহিতের মন্ত্রপাঠ, সিঁদুর দান, সবশেষে সাতপাকের আয়োজন। কিন্তু পুরো আয়োজন জুড়ে বর-কনে হিসেবে সজ্জিত করা হয়েছে দুটো বট-পাকুড় গাছকে।
বুধবার (৯ মার্চ) দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের গড়নূরপুর এলাকায় এমন বিয়ের আয়োজন করা হয়। গোধূলিলগ্নে এই বিয়ের আয়োজন সম্পূর্ণ করেন আয়োজকরা। এই বিয়েতে বরের বাবা হিসেবে ছিলেন গড়নূরপুর এলাকার কমলাকান্ত রায়। আর কনের পক্ষে কন্যাদান করেন নোধাপুর এলাকার রমেশ রায়।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সনাতন ধর্মগ্রন্থ মহাভারতেও এই বিয়ের প্রচলন রয়েছে। মহাভারতে নিজের মনসকামনায় প্রথম এই বিয়ের আয়োজন করেন ভদ্রশীল নামে এক ব্রাহ্মণ।
বর ও কনের বাবা কমলাকান্ত এবং রমেশ রায় বলেন, ‘আমাদের একটা মনসকামনা ছিল। সেটি পূরণ হয়েছে। তাই আমরা এই বিয়ের আয়োজন করেছি। এতে এলাকাবাসী সহায়তা করেছে। এখানে আসা বরযাত্রী অর্থাৎ ভক্তদের নিরামিষ ভাত-তরকারি খাওয়ানো হয়েছে।’ তবে তাদের কী মনসকামনা পূরণ হয়েছে সেটি জানাননি তারা।
বিয়ের পুরোহিত বিবেকানন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই বিয়ের আয়োজন সত্য যুগ থেকেই হয়ে আসছে। বিয়ের বর কনে হল বট-পাকুড় গাছ। একটি মেয়ের বিয়েতে যেমন আয়োজন হয়ে থাকে, এই বিয়েতেও তার কমতি ছিল না। সাধারণত কারো মনসকামনা পূরণ হলে এই বিয়ের আয়োজন করে থাকেন।
ভদ্রকালি মন্দির পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মৃণাল রায় বলেন, এই বিয়ের আয়োজনে কয়েক গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ এখানে এসেছে। বিয়ের আয়োজনে প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ভক্তরাও এই বিয়েতে একাত্মতা ঘোষণা করেছে।