সিলেট নগরের টিলাগড়ে শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের ‘হয়রানিমূলক’ মামলা দায়েরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে এমসি কলেজের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) দুপুর দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সড়ক অবরোধ করে রাখার পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে যান।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে দেলোয়ার হোসেন রাহি নামের এমসি কলেজের শিক্ষার্থী মোটরসাইকেলে করে টিলাগড় পয়েন্ট দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ আটক করে। এ সময় রাহির মাথায় হেলমেট না থাকায় তার বিরুদ্ধে ১৫ হাজার টাকার মামলা দায়ের করে ট্রাফিক পুলিশ।
দেলোয়ার হোসেন রাহি বলেন, আমার গাড়ির কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স সব ঠিক ছিল। শুধু আমার হেলমেট ভেঙে গেছে তাই সঙ্গে আনতে পারিনি। আমি অনুনয়-বিনয় করে কাগজপত্র রেখে মাত্র ১০ মিনিট সময় সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার কথা না শুনে, আমাকে সময় না দিয়ে ১৫ হাজার টাকার মামলা দিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, শুধু আমাকেই নয়- এভাবে আজ আরও দুই শিক্ষার্থীকে কয়েক হাজার টাকার মামলা দিয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত এভাবে টিলাগড় পয়েন্টে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করে। শিক্ষার্থীরা এত টাকা পাবে কোথায়?
এদিকে, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের খবর পেয়ে এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে টিলাগড় পয়েন্টে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে এমসিসহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখায় বন্দর-টিলাগড় এবং টিলাগড়-আম্বরখানা সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হোসেনসহ এমসি কলেজ ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে আসেন। পরে তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণ জেনে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের দাবি মানার আশ্বাসে বিকাল তিনটার দিকে অবরোধ তুলে নেন। পরে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমিসহ এমসি ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে যাই। আমরা তাদের দাবি শুনে আন্দোলনে যোগ দেই। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের দাবি মানার শর্তে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।’
নাজমুল আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হয়রানি না করতে সিলেট শহরের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঁচজন শিক্ষার্থী নিয়ে আগামী রোববার ট্রাফিক বিভাগের ডিসি’র সঙ্গে আলোচনার জন্য বসা হবে।’
এ ব্যাপারে এসএমপির শাহপরান (রহঃ) থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্জ বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি। শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক বিভাগের ডিসি’র সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন।’