রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন না দেওয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে আদালত অবমাননার অভিযোগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে কেন কার্যক্রম ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) এ রুল জারি করেন।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির (মো. জোনায়েদ আব্দুর রহিম সাকি) করা আদালত অবমাননার আবেদনে এ রুল জারি করা হয়েছে। আদালতে সাকির পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
হাইকোর্টের রায় ও নির্দেশনা থাকার পরও গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন না দেওয়ায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি তখনকার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়। কিন্তু, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে নুরুল হুদার মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন সিইসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ অবস্থায় গতকাল আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানিকালে আবেদন সংশোধন করে নুরুল হুদার পরিবর্তে কাজী হাবিবুল আউয়ালকে বিবাদী করা হয়। এরপর শুনানি নিয়ে আদালত নতুন সিইসির বিরুদ্ধে রুল জারি করেন।
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চেয়ে ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে আবেদন করে গণসংহতি আন্দোলন। কিন্তু, ইসি ২০১৮ সালের ১৯ জুন এক চিঠির মাধ্যমে গণসংহতি আন্দোলনকে জানিয়ে দেয় যে নিবন্ধন করা যাবে না। এরপর গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল এক রায়ে গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে ইসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রায়ের কপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন দিতে বলা হয়। এরপর গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ রায় ও আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি নির্ধারিত সময়ে ইসিতে দাখিল করা হয় এবং আদালত থেকেও নিয়ম অনুযায়ী রায় ও আদেশের অনুলিপি পাঠানো হয়।
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, আদালতের সুস্পষ্ট রায় ও নির্দেশনা থাকার পরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইসি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এরপর বিভিন্ন সময়ে বারবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো ফল না পাওয়ায় গত বছর ১০ অক্টোবর প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চেয়ে জুনায়েদ সাকি আদালত অবমাননার মামলা করেন।