logo
আপডেট : ১১ মার্চ, ২০২২ ১০:৩৮
যাত্রা অনিশ্চিত, তারপরও চেলসির জয়
ক্রীড়া ডেস্ক

যাত্রা অনিশ্চিত, তারপরও চেলসির জয়

চেলসিতে যা চলছে তাকে ভূমিকম্প বললে কম বলাই হবে। কখন কি হবে তা একমাত্র ভবিতব্যই জানে। ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে, না নিজেদের আরো শক্তিশালী করে তারা এগিয়ে যাবে তা এ মুহূর্তে অজানা। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে মালিক আব্রামোভিচ চেলসি বিক্রি করে দিতে চেয়েছেন। ফলে একটা পরিবর্তন যে আসছে তা অনেকটা নিশ্চিত। কিন্তু সেখানও জটিলতা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে চেলসি মাঠে সাফল্য অব্যাহত রেখেছে। বৃহস্পতিবার ক্যারো রোডে অনুষ্ঠিত ম্যাচে তারা স্বাগতিক নরউইচকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে।

ট্রেভোহ চালোবাহ ও ম্যাসন মাউন্ট ম্যাচের শুরুতে গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। পরে নরইউচ ব্যবধান কমালেও কাই হাভের্টজ শেষ মুহুর্তে গোল করে জয় নিশ্চিত করেন। এ চেলসির জন্য বড় এ স্বস্তির বিষয়। অথচ ম্যাচের মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে যুক্তরাজ্যের সরকার আব্রামোভিচের সম্পদ জব্দ করার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ফলে আব্রামোভিচ ক্লাব এখনই বিক্রি করতে পারছেন না।

যুক্তরাজ্যের এমন সিদ্ধান্তের কারণে ক্লাবের ভবিষ্যত চরমভাবে অনিশ্চতায় ঢাকা পড়েছে। কিভাবে ক্লাব চলবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। তারা তাদের পরবর্তী ম্যাচগুলো খেলতে পারবে। তবে তারা নতুন টিকেট বিক্রি করতে পারবে না। ক্লাবের দোকানপাটও বন্ধ রাখতে হবে। তারা খেলোয়াড়দের সঙ্গে নতুন কোনো চুক্তিও করতে পারবে না। আগামী গ্রীষ্ম মৌসুমে তাদের নতুন করে ট্রানজাকসন করার ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

যুক্তরাজ্য সরকার ক্লাবের ব্যয়ের একটা মাত্রাও নির্ধারণ করে দিয়েছে। সে বিচারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অ্যাওয়েতে তাদের জন্য খেলা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। তবে এখনই এসব নিয়ে ভাবতে রাজি নন চেলসি কোচ টমাস টুখেল। অবশ্য তিনি নিজেও রয়েছেন অনিশ্চয়তায়। তবে এসব অনিশ্চয়তাকে দূরে ঠেলে তিনি সময়টা উপভোগের পক্ষে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে নরউইচের জয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘মাঠে কেমন খেলবে তা নিয়ে আমার দুঃশ্চিন্তা ছিল না তা যদি বলি তাহলে মিথ্যা বলা হবে। তবে খেলোয়াড়দের ওপর আমার আস্থা ছিল। কেননা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের ভালো খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এমন অনেক ম্যাচেই আমরা সাফল্য পেয়েছি। সুতরায় আমরা আমাদের মানসিকতার ওপর বিশ্বাস রেখেছিলাম। এ ম্যাচে আমরা আবার প্রমাণ করেছি ফুটবল এবং খেলায় আমরা মনোনোগী রয়েছি। আমরা এমন ক্লাবে কাজ করি যেখানে সবাই শুধু খেলাধূলায় মনোযোগী অন্য কিছুতে নয়।

টুখেল আরো বলেন, মানুষজন যেমনটা চিন্তা করছে পরিস্থিতি তেমন কঠিন কিছু নয়। সমস্যা চলছে তবে এটা অন্য পর্যায়ে। কিন্তু আমাদের খেলাধূলা একই অবস্থায় রয়েছে। নরউইচের বিপক্ষে খেলায়ও তার ব্যতিক্রম ছিল না। তবে বিষয়টি নিয়ে যে, আলোচনা চলছে না তা নয়।’

অবশ্য ক্লাবের এমন পরিস্থিতির মধ্যে নরউইচের চেয়ে ভালো প্রতিপক্ষ এখন চেলসির ছিল না। নরউইচ এমনিতেই পয়েন্ট টেবিলের সবার নিচে। তার ওপর গত পাঁচ ম্যাচে প্রিমিয়ার লিগের সব ম্যাচেই তারা হেরেছে।

ক্লাবের স্পন্সরশিপ নিয়ে শুরু হয়েছে জটিলতা। ম্যাচ শুরুর আগে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ‘থ্রি’ কোম্পানি চেলসির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের কথা জানায়। তবে এ ম্যাচে ‘থ্রি’ লোগে সম্বলিত জার্সিতেই মাঠে নেমেছিল চেলসি। এমন পরিস্থিতি সত্ত্বেও ম্যাচের শুরু থেকেই তারা প্রতিপক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তার ফলও তারা পেয়ে যায়। ১৪ মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল তুলে নেয়। প্রথমে ট্রেভোহ চালোবাহ ও পরে ম্যাসন মাউন্ট গোল করেন। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল পায়নি চেলসি। শুধু তাই নয়, দ্বিতীয়ার্ধে নরউইচ ব্যবধান কমালে ম্যাচে উত্তেজনা ফিরে আসে। পেনাল্টি থেকে গোল করেন টিমু পুকি। চেলসি গোলরক্ষক এডুয়ার্ড মেন্ডিকে বোকা বানিয়ে গোলটি করেন তিনি। তার এ গোলে স্বাগতিক দর্শকরা প্রথমবারের মতো ম্যাচে উল্লাস করার সুযোগ পায়।

এ গোলে স্বাগতিক দর্শকরা যেমন উজ্জ্বীবিত হয়, তেমনি খেলোয়াড়রা। তারই ধারাবাহিকতায় নরউইচ বেশ কয়েকবার চেলসির জন্য হুমকি তৈরি করেছিল। তবে তা থেকে কোনো ফায়দা তুলতে পারেনি, বরং ৯০ মিনিটে তাদের আরো একটা গোল হজম করতে হয়।

এ জয়ে চেলসি প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলে তৃতীয় স্থান সুদৃঢ় করেছে। একই সঙ্গে পরবর্তী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাও অনেকটা নিশ্চিত করেছে। ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে তারা। আর চতুর্থ স্থানে থাকা আর্সেনালের পয়েন্ট ৪৮।