রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে জেতেনি কোনো দল। পিচটা ব্যাটারবান্ধব ছিল। ফলে ব্যাটাররা আধিপত্য করেছে। বিপরীতে বোলাররা হা পিত্যিশ করে মরেছে। পাঁচদিনের ম্যাচে আবহাওয়া খুব বেশি ঝামেলা করেনি। পাঁচদিনে খেলা হয়েছে ৩৭৯। উইকেপের পতন হয়েছে মাত্র ১৪টি। পাকিস্তানের চারটি, আর অস্ট্রেলিয়ার ১০টি। পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট হারানোর পর ইনিংসের সমাপ্তি টানে। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তারা কোনো উইকেট হারায়নি।
দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন ওপেনার ইমাম উল হক। পাকিস্তানের দশম ব্যাটার হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন। এমন কীর্তির পরও প্রশংসা পাচ্ছেন না ইমাম উল হক। তার পাশাপাশি অপর ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিকও কীর্তি গড়েছেন। তবে এককভাবে নয়, জুটিতে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওপেনিং জুটিতে সর্বাধিক রানের কীর্তি গেড়েছেন ইমাম উল হক ও আব্দুল্লাহ শফিক।
পিচ নিয়ে বেশ সমালোচনাও হয়েছে। অনেকের মতে ‘ফ্ল্যাট’ পিচের সুবিধা নিয়ে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন ইমাম। ম্যাচ শেষে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেছিলেন, প্রাণহীন এ পিচে অস্টেলিয়ার পেসারদের জন্য কিছুই ছিল না। পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজাও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ড্র পাঁচদিনের ম্যাচের আদর্শ বিজ্ঞাপন নয়।
অবশ্য এসব নিয়ে ভাবতে রাজি নন তিনি। বরং পারফর্ম করেই খুশি ইমাম। একই সঙ্গে সমালোচকদেরও এক হাত নিয়েছেন। এক সাক্ষাতকারে ইমাম বলেছেন, ‘পিচ যেমনই হোক, আমার কাজ পারফর্ম করা। কিউরেটররা আমার আত্মীয় নন। তারা আমার পরামর্শ নিয়ে পিচ তৈরি করেননি। প্রত্যেক দলই তাদের শক্তিমত্তার কথা বিবেচেনা করেই পিচ তৈরি করে।’
ইমাম আরো বলেন, ‘ড্র কেউই চায় না। সবাই পাঁচদিনের ম্যাচে ফল চায়। যাহোক আমরা অস্ট্রেলিয়াতে যাই তারা কি আমাদের মত নিয়ে উইকেট তৈরি করে? বরং নিজেদের সুবিধা অনুসারে পিচ তৈরি করে।’
ড্র যে টেস্টের ভালো ফল নয় তা ইমামও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ম্যাচে ড্র কেউ দেখতে চায় না। প্রত্যেকেই পাঁচদিনের ম্যাচে ফল দেখতে চায়। কিন্তু আমরা যখন অস্ট্রেলিয়া যাই তখন পিচ তৈরির বিষয়ে তারা আমাদের সঙ্গে পরামর্শ নেয় না।’
দ্বিতীয় টেস্ট নিয়েও কথা বলেছেন ইমাম উল হক। তিনি বলেন, ‘করাচি টেস্টে আমরা ভালো ফল আশা করছি। আমার বিশ্বাস রাওয়ালপিণ্ডি টেস্টে আমরা ভালো খেলেছি। প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট নিতে পেরেছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আলোর স্বল্পতা ও বৃষ্টির কারণে ৭০ ওভারের মতো খেলা হয়নি। ওই ৭০ ওভার খেলা হলে ম্যাচের ফল ভিন্ন হতে পারতো। কেননা তাদেরকে আবার ব্যাটিংয়ে নামানোর পরিকল্পনা ছিল আমাদের।
অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ২৩৯ ওভার বোলিং করে তারা মাত্র তিনটি উইকেট শিকারে সমর্থ হয়। অন্যটি ছিল রান আউট। ১৪৫ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এটা দ্বিতীয় বাজে বোলিং। পাকিস্তান চারটি সেঞ্চুরির দেখা পেলেও অস্ট্রেলিয়া কোনো ব্যাটার তিন অঙ্কের রান করতে পারেনি।
শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। করাচিতে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। গত পাঁচ বছরে স্পিনাররা এখানে তুলনামূলক অসহায় ছিলেন। পেসাররা নিয়েছেন ৪৯৯ উইকেট আর স্পিনাররা সাফল্যের হাসি হেসেছে ২৭৫ বার।