logo
আপডেট : ১২ মার্চ, ২০২২ ১৯:৩৭
মধ্যপাড়া খনি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ
দিনাজপুর প্রতিনিধি

মধ্যপাড়া খনি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ

দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের মধ্যপাড়া খনির পাথর উত্তোলন বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার (১২ মার্চ) সকাল থেকে এই পাথর উত্তোলন বন্ধ রেখে খনি শ্রমিকদের সাময়িক ছুটিতে পাঠিয়েছে খনিটির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রাস্ট।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিস্ফোরক দ্রব্য (অ্যমোনিয়াম নাইট্রেট) সংকটের কারণে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সংকটের কারণ হিসেবে তারা দায়ী করছেন কোভিড পরিস্থিতি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ।

এই বিষয়ে মধ্যপাড়া গ্রানাইড মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের মহা-ব্যাবস্থাপক (মাইনিং) আবু তালহা ফরাজি বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সময়মতো অ্যমোনিয়াম নাইট্রেট আমদানি করা সম্ভব হয়নি। ফলে এই সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বিস্ফোরকদ্রব্য আমদানির কাজ চলছে। আশা করছি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই এই বিস্ফোরক আমদানি করা সম্ভব হবে।’

জানা যায়, দেশের একমাত্র পাথর খনি দিনাজপুরের মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল) উৎপাদন শুরু করে ২০০৭ সালের ২৫ মে। উৎপাদন শুরুর প্রথম দিকে খনি থেকে দৈনিক পাথর উত্তোলন করা হয় ১ হাজার ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ টন।

কিন্তু পরবর্তীতে এই উৎপাদনের অবনতি ঘটে। ১ হাজার ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ টনের স্থলে তা নেমে যায় মাত্র ৫শ’ টনে। এর ফলে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত লোকসানের পরিমাণ শত কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

লোকসানের পরিমাণ কাটাতে প্রয়োজন উৎপাদন বৃদ্ধি। সেজন্য ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৯২ লাখ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলনের বিপরীতে ১৭১.৮৬ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে খনির উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বেলারুশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম-জিটিসি’কে।

এমন অবস্থায় উৎপাদন বাড়াতে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি তিন শিফটে পাথর উত্তোলন করছে এবং কাজ করছে প্রায় ৭৫০ জন শ্রমিক। এছাড়াও দেশি-বিদেশি মিলে রয়েছে প্রায় ২০০ জন কর্মকর্তা।

তিন শিফটে এখানের পাথর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫৫০০ মে.টন। অবশ্য কখনো কখনো লক্ষ্যমাত্রারও বেশি পাথর উত্তোলন করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।

লাভের মুখ দেখায় পাথর উত্তোলনের জন্য ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জিটিসির সঙ্গে আগামী ছয় বছরের পুনঃ চুক্তি করে মধ্যপাড়া গ্রানাইড মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (মধ্যপাড়া পাথর খনি) কর্তৃপক্ষ।

সেই চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি।