logo
আপডেট : ১৩ মার্চ, ২০২২ ১০:২৩
মেহেরপুরে স্থলবন্দরের ঘোষণা, দাবি পূরণে আনন্দিত জেলাবাসী
বেন ইয়ামিন মুক্ত, মেহেরপুর

মেহেরপুরে স্থলবন্দরের ঘোষণা, দাবি পূরণে আনন্দিত জেলাবাসী

মেহেরপুরের মুজিবনগরে অবস্থিত স্বাধীনতা সড়ক

মেহেরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল স্থলবন্দরের। অবশেষে মিলেছে সেই ঘোষণা। গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ প্রকাশিত এক গেজেটে ঘোষিত হয়েছে মেহেরপুরের মুজিবনগরের নাম। এতে আনন্দিত জেলাবাসী।

তারা এখন আশায় আছেন দ্রুত কাজ বাস্তবায়নের। আর দুই দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে শিগগিরই স্থলবন্দর বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

স্বাধীনতার সূতিকাগার মেহেরপুরের মুজিবনগর। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণের পর এই মুজিবনগর (তৎকালীন বৈদ্যনাথতলা) দিয়েই ভারত গিয়েছিল। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বরাবরই সুসম্পর্ক এক সময়ের নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত এই এলাকাটি।

ওপারে রয়েছে ভারতের চাপড়া থানার হৃদয়পুর গ্রাম। আত্মীয়তার সম্পর্ক রাখতে চিকিৎসার প্রয়োজনে অথবা ব্যবসায়িক কাজে নিয়মিত ভারত যেতে হয় এই এলাকার মানুষের। আর এ জন্য ব্যবহার করতে হয় পাশের চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা চেকপোস্ট।

দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন ও ব্যবসায়িক প্রসারে একটি পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর দীর্ঘদিন দাবি করে আসছিল এ অঞ্চলের মানুষ। আর সেটি যেন হয় মেহেরপুরের মুজিবনগরে।

অবশেষে সরকারি ঘোষণায় আনন্দে উৎফুল্ল এই এলাকার মানুষ। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত ৯টি স্থলবন্দরের অনুমোদন হয়েছে। যার মধ্যে মেহেরপুরের মুজিবনগরের নাম সপ্তম স্থানে।

গেজেট আনুযায়ী পণ্য আমদানির তালিকায় আছে মাছ, সুতা, গুঁড়া দুধ, চিনি ও আলু। তাছাড়া রয়েছে সুনির্দিষ্ট ওজনের মালামাল ও যাত্রীর ব্যাগেজ। রপ্তানির জন্য বৈধ সব পণ্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। স্থলবন্দরটি বাস্তবায়িত হলে ব্যবসায়িকভাবে উপকৃত হবে এলাকাবাসী।

মুজিবনগর উপজেলার ব্যবসায়ী ওমর ফারুক প্রিন্স বলেন, স্থলবন্দরটি হলে মুজিবনগর তথা মেহেরপুরের ব্যবসার ব্যাপক প্রসার ঘটবে। আমাদের উৎপাদিত পণ্য ভারতে এবং ভারতের পণ্য সুলভমূল্যে পাওয়া যাবে। এছাড়া অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে। সরকারের এই ঘোষণায় ব্যবসায়িক মহল খুব খুশি।

মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়্যুব হোসেন বলেন, ‘মেহেরপুরের স্থলবন্দরটি বাস্তবায়িত হলে দুই বাংলার মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হবে। এলাকার যুবকদের কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হবে। দেশ-বিদেশের মানুষ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দর্শনের উদ্দেশ্যে আসবে। এতে দেশ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে।’

স্থলবন্দর বাস্তবায়ন আন্দোলন ফোরামের নেতা এমএএস ইমন বলেন, ‘সীমান্তবর্তী জেলা হিসেবে মেহেরপুরে এখনো গড়ে ওঠেনি কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান। জেলার উন্নয়নে ন্থলবন্দর সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এই আশায় দীর্ঘদীন জেলাবাসীকে নিয়ে আন্দোলন করছি।’

অবশেষে গেজেটভুক্ত করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। দ্রুত জেলাবাসী এর সুফল ভোগ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এ বিষয়ে জনপ্রসাশন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ‘এই সরকার জনবান্ধব সরকার। বঙ্গবন্ধুর নামের স্মৃতি বহনকারী মুজিবনগরে স্থলবন্দর দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য বড় অবকাঠমো প্রয়োজন, তার আগে যাত্রী পারাপারের জন্য ব্যবস্থা করা হবে। প্রথমত আমরা লোহার অবকাঠামো তৈরি করে কাজ শুরু করব।’

ইতোমধ্যে রাস্তার কাজ হয়েছে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে আলোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব স্থলবন্দর চালু করা হবে বলে আশ্বাস দেন মন্ত্রী।