পুলিশী নির্যাতনে হত্যার বিচার, কলেজপড়ুয়া মেয়ের শ্লীলতাহানি এবং শিশু সন্তানের মায়ের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে একটি বিহারী পরিবার। এ সময় মায়ের হত্যাকাণ্ডে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
রোববার (১৩ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পৃথিবী আক্তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, বিহারী জনগোষ্ঠীর মানুষ হওয়াই আমাদের জন্য পাপ। মান সম্মান, সম্পদ ও জীবন রক্ষা করতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। পল্লবী থানার সোর্স তারেক পুলিশের হয়ে চাঁদা দাবী করে। আমরা হত দরিদ্র। কিভাবে তাকে চাঁদা দিব? আমার মা হার্টের রোগী ছিল, চাঁদা দিতে না পারায় ১৬ ফেব্রুয়ারী রাত ১০টায় আমাদের বাসায় এসে সোর্স তারেক আমার ভাই ডলারকে কয়েকজন পুলিশ নিয়ে আক্রমণ করে। এএসআই হরিদাস, এসআই তাপসের টিমের সদস্যরা বাসা থেকে আমার ভাইকে বিনা কারণে নিয়ে যেতে চাইলে আমার মা তাতে বাধা দেয়। এসময় মাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। তিনি জ্ঞান হারান। সারারাত আমার মায়ের জ্ঞান ফিরেনি। রাত ৩টার দিকে আমার মায়ের মৃত্যু হয়। পুলিশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই আমার মাকে দ্রুত কবর দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। ফলে আমরা বাধ্য হয়ে দ্রুত মায়ের কবর দেই।
ভুক্তভোগীরা বলেছেন, এ ঘটনায় থানায় বিচার না পেয়ে আমরা যখন আদালতে হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখনই পুলিশ খবর পেয়ে যায়। গত ২ মার্চ বিকেলে আবার আমাদের বাসায় হামলা চালায় পুলিশ। আমার কলেজপড়ুয়া বোন দীপা আক্তার ফেসবুকে লাইভে যায়। তখন এসআই আনোয়ার, এএসআই হুমায়ন কবির হাওলাদার, এএসআই হরিদাস, আমার বোনদের বুকে হাত দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে ভিডিওটি ডিলিট করে দেয়।
তারা বলেন, ভিডিওটি ফেসবুক থেকে উদ্ধার করা হোক। তাহলেই প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে। আমার বোন দীপা আক্তার মেধাবী ছাত্রী। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সম্পূর্ণ বিনা কারণে। করা হয়েছে তার শ্লীলতাহানি। প্রকাশ্যেই পুলিশ যেখানে এমন কাজ করেছে, থানায় নিয়ে নির্যাতন করার সময় আরো কত কিছু করেছে। এই বোনের বিয়ে আমরা দিব কি করে? নারী পুলিশ ছাড়াই রিপা আক্তার ও দীপা আক্তার নামে আমার দুই বোন ও এক ভাইকে নিয়ে যায়। নেওয়ার সময় থেকেই পুলিশ আমার ভাইবোনদের অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতনের ফলে আমার ভাই গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। আমার বোন রিপা আক্তার ৬ মাস বয়সী শিশু সন্তানের মা।
লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী জানান, প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে। আমাদের অপরাধ এইটুকুই, আমরা গরীব খেটে খাওয়া মানুষ।
তিনি বলেন, পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম আসার পর থেকে পল্লবীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।