অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে এবং ল্যান্ড প্রজেক্ট টেক্সটাইল ও অন্যান্য ব্যবসায় বিনিয়োগের কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র। এই চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
এই প্রতারক চক্রের অন্যতম হোতা ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শাহ আলমসহ ৫ জনকে নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার (১৩ মার্চ) কাওরান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা জানিয়েছেন।
র্যাব জানিয়েছে, ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় গুটিয়ে নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সবাই গা ঢাকা দিলে বিষয়টি নরসিংদী জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
র্যাব জানায়, নরসিংদী জেলার বিভিন্ন এলাকায় শাখা অফিস স্থাপন করে প্রতারণার কৌশল ব্যবহার করে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-শাহ সুলতান এম.সি.এস. কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ, স্বদেশ টেক্সটাইল লিঃ, শাহ সুলতান টেক্সটাইল লিঃ ও শাহ সুলতান প্রপার্টিজ লিঃ।
র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১১ এর অভিযানে নরসিংদী জেলার সদর থানার ভেলানগর থেকে শাহ আলম (৫০) এবং তার ৪ সহযোগী মোঃ দেলোয়ার হোসেন শিকদার (৫২), কাজী মানে উল্লাহ( ৪৪), মোঃ সুমন মোল্লাহ (৩৩) ও আঃ হান্নান মোল্লাহকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক ব্যবসায় খুব সহজেই উদ্বুদ্ধ হয়। এ কারণে সুদহীন ব্যবসার প্রলোভন দ্রুত মানুষের মনে আস্থার জায়গা তৈরী করে। শরিয়াভিত্তিক ব্যবসাকে প্রতারণার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের কৌশল খুব সহজেই সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে।
তিনি বলেন, নরসিংদী জেলার ৫-৬ হাজার সাধারণ মানুষ একটি প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে ব্যবসায়ে অতিরিক্ত লভ্যাংশ প্রাপ্তির আশায় শত-শত কোটি টাকা অর্থ বিনিয়োগ করে সর্বশান্ত হয়েছেন। প্রতারক চক্রের সদস্যরা সাধারণ মানুষের প্রায় ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ভুক্তভোগীরা তাদের গচ্ছিত টাকা ফিরে পাবার আশায় স্থানীয় সমবায় অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে। এরপর জেলা সমবায় অধিদপ্তর তদন্ত কমিটি গঠন করে।
তিনি জানান, ২০১০ সালে নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া এলাকায় শাহ সুলতান মাল্টিপারপাস কোম্পানীর প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে প্রতারক চক্র। প্রতারকচক্রটি অতি সুকৌশলে ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সুদমুক্ত ব্যবসায় প্রলুব্ধ করে পেশাজীবি মানুষের নিকট হতে আমানত সংগ্রহ করে। ধর্মের দোহাই দিয়ে সাধারণ জনগণকে ভুল বুঝিয়ে তাদের সংস্থার সদস্য করা হত। উক্ত চক্রের অন্যতম হোতা শাহ আলম নিজে কোম্পানীর চেয়ারম্যান হিসেবে ৪টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে।