ইউক্রেনের ভূখণ্ড দখলের কোনো পরিকল্পনা রাশিয়ার নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটাস্কি। রোববার (১৩ মার্চ) ঢাকাস্থ রুশ দূতাবাস থেকে পাঠানো বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে।
ইউক্রেনের জনগণের সঙ্গে রাশিয়া যুদ্ধ করছে না উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটাস্কি বলেন, ‘আমরা জোর করে কারো ওপর কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না। আমরা বহুবার ব্যাখ্যা করেছি যে, ইউক্রেনের পরিস্থিতি এমনভাবে বিকশিত হয়েছে যে এটি রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি ইউক্রেন সম্পর্কিত রাশিয়াবিরোধী প্রচার-প্রচারণার জন্য পশ্চিমা সংবাদ সংস্থাগুলোর বিপুল সংখ্যক সম্পাদকীয়, নিবন্ধ, পুনঃমুদ্রণসহ ইউরোপীয় এবং আমেরিকান বিশ্লেষকদের প্রকাশনাগুলো দেখেছি।
‘এসব প্রকাশিত এবং সম্প্রচারিত সংবাদ পক্ষপাতমূলক। এমনকি রাশিয়ার প্রতি ঘৃণা থেকে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। রাশিয়াবিরোধী এমন প্রচারণায় কিছু নির্দিষ্ট বাংলাদেশি সংবাদপত্র এবং সম্প্রচার মাধ্যমও জড়িয়ে পড়েছে। আমি বাংলাদেশি পাঠকদের কাছে ইউক্রেন নিয়ে আবারো রুশ সামরিক বাহিনীর লক্ষ্য এবং কাজগুলো ব্যাখ্যা করতে চাই।’
রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটাস্কি বলেন, অভিযান পরিচালনার কারণ হচ্ছে, ইউক্রেনের রুশ-ভাষী বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা, যারা ৮ বছর ধরে কিয়েভ সরকার দ্বারা গণহত্যার শিকার হয়েছেন। অভিযানের লক্ষ্য নব্য ফ্যাসিবাদ নির্মূল করা এবং ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশ রোধ করা। ইউক্রেনে ন্যাটোর সামরিক ঘাঁটি স্থাপন বন্ধ করাও এ অভিযানের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ এবং ও নাৎসি মতাদর্শ থেকে মুক্ত করাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের লক্ষ্য ইউক্রেনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা নব্য ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটানো। রাশিয়ান ফেডারেশনের সীমান্তে সামরিক হুমকি দূর করতে চাই আমরা।’
শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য হুমকিস্বরূপ ইউক্রেনের আগ্রাসী সত্ত্বাকে নিরস্ত্র করা প্রয়োজন উল্লেখ করে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, রাশিয়ান ফেডারেশনের আদালতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইউক্রেনের বেসামরিক লোক ও রাশিয়ান ফেডারেশনের নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং শাস্তি দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, আমরা রাশিয়ান ফেডারেশনের পার্লামেন্টের অনুমতি নিয়ে জাতিসংঘের সনদের অনুচ্ছেদ ৫১ (অধ্যায় ৭ ) অনুসারে এবং দোনেতস্ক ও লোহেনস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সহায়তার চুক্তি বাস্তবায়ন চাই। এসব লক্ষ্যে মস্কো এই বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেছে।