ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলায় নিহত জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ অবশেষে দেশে এসে পৌঁছেছে।
তুরস্কের ইস্তাম্বুল হয়ে টার্কিস এয়ারলাইন্সের টিকে-০৭২২ ফ্লাইটে মরদেহটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় আজ সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে। হাদিসুরের মরদেহ গ্রহণ করতে বিমানবন্দরে অপেক্ষায় ছিলেন তার ছোটভাই গোলাম রহমান প্রিন্সসহ নিকট আত্মীয় এবং বন্ধুরা। তারা বাবা আব্দুর রাজ্জাক ও মা আমেনা বেগম বিমানবন্দরে আসেননি।
হাদিসুরের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা বাজারসংলগ্ন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে বোন সবার বড়। এরপর হাদিসুর রহমান। ছোট দুই ভাই লেখাপড়া করছেন। হাদিসুর রহমানই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
গত শুক্রবার (১১ মার্চ) গভীর রাতে ইউক্রেন থেকে মালদোভা হয়ে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে পৌঁছায় হাদিসুরের মরদেহ। কিছু দাপ্তরিক কাজ শেষে হাদিসুরের মরদেহ ঢাকায় পাঠানোর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
শনিবার রাত ১০টার দিকে বুখারেস্ট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য মরদেহটি টার্কিস এয়ারলাইন্সের একটি কার্গো ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছানোর পর সেখানে ভারী তুষারপাতের কারণে ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি ড্যানিশ কোম্পানি ডেল্টা করপোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। জাহাজটি মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে যায়। সেখান থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল।
এর আগেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন ক্রু নিয়ে অলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে জাহাজটি। ২ মার্চ রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। পরদিন ৩ মার্চ জাহাজটি থেকে ২৮ নাবিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তাদের নিরাপদ বাঙ্কারে রাখা হয়।
সেখান থেকে তাদের প্রথমে মালদোভা, পরে রোমানিয়া হয়ে ৯ মার্চ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তারা সবাই সুস্থ আছেন এবং বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রয়েছেন।
গত ৯ মার্চ ২৮ নাবিকের ঢাকা ফেরার দিন হাদিসুরের মরদেহ গ্রহণ করতে বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়েছিলেন তার ছোটভাই, মা-বাবা ও নিকট আত্মীয়রা।