logo
আপডেট : ১৪ মার্চ, ২০২২ ১৫:১৫
হোসেনি দালানে হামলার রায় আগামীকাল
আদালত প্রতিবেদক, ঢাকা

হোসেনি দালানে হামলার রায় আগামীকাল

প্রতীকী ছবি

পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) বোমা হামলার মামলার রায় হবে আগামীকাল মঙ্গলবার (১৫ মার্চ)।

ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রায় ঘোষণার জন্য এই দিন ধার্য করেছেন। ১ মার্চ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।

২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর রাতে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে হোসেনি দালান এলাকায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে বোমা হামলা চালায় জেএমবি।

এ ঘটনায় এসআই জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি তদন্ত করে চকবাজার থানা পুলিশ। পরে এর তদন্তভার ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।

তদন্ত শেষে ডিবি দক্ষিণের পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিউদ্দিন শেখ ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে ১০ জঙ্গিকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর মামলাটি ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়।

অভিযোগপত্র অনুযায়ী ৮ আসামির নাম-কবীর হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আসিফ, আবু সাঈদ ওরফে সালমান, আরমান ওরফে মনির, রুবেল ইসলাম ওরফে সুমন ওরফে সজীব, চান মিয়া, ওমর ফারুক, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ ও শাহজালাল। এদের মধ্যে আরমান, কবির হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এই ৮ জনের বিরুদ্ধে ১৫ মার্চ রায় ঘোষণা করবে আদালত।

সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সোরোয়ার খান জাকির ভোরের আকাশকে জানিয়েছেন, আসামি জাহিদ হাসান ও মাসুদ রানা অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিচার চলছে ঢাকার একটি শিশু আদালতে। এদের মধ্যে জাহিদ হাসান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০১৭ সালের ৩১ মে ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর পর ওই আদালতে মামলার বাদী মো. জালাল উদ্দিন সাক্ষ্য দেন।

অভিযোগপত্রভুক্ত ১০ আসামির মধ্যে জাহিদ হাসান ও মাসুদ রানার পক্ষে তাদের আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেন, ওই আসামিরা অপ্রাপ্তবয়স্ক। এর স্বপক্ষে জন্মসনদ, পরীক্ষার সনদ জমা দেওয়া হয় ট্রাইব্যুনালে। আদালত সব কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাদের শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করে।

এরপর মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা আইন অনুযায়ী ওই দুই আসামিকে শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর বিচারের জন্য সম্পূরক অভিযোগপত্র শিশু আদালতে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, ওই হামলায় ১৩ জঙ্গি জড়িত ছিল। এদের মধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযানের সময় তিন জঙ্গি ক্রসফায়ারে মারা যায়।

নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, মামলাটির তদন্তে অনেক সময় ক্ষেপণ করা হয়। দীর্ঘদিন বিচারকাজ থেমে ছিল।
এরপর ২০১৮ সালের ১৪ মে মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলি হয়। মামলাটি বদলি হওয়ার পর থেকে গতি পায়।

এ ট্রাইব্যুনালে আসার পর ৩১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

মামলার নথিতে বলা হয়, গত জানুয়ারিতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত আবদুল্লাহ বাকি ওরফে নোমান ছিলেন হোসেনি দালান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। হামলার আগে ১০ অক্টোবর তারা বৈঠক করে হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন।

বোমা হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন জাহিদ হাসান, আরমান ও কবির হোসেন। কবির ও জাহিদ ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান।

হামলার পর আশ্রয় নিতে কামরাঙ্গীর চরে বাসা ভাড়া করেন আরমান ও রুবেল ইসলাম। আরমান হোসেনি দালানে উপস্থিত থেকে পর পর পাঁচটি বোমা নিক্ষেপ করে।

চানমিয়া, ওমর ফারুক, আহসান উল্লাহ, শাহজালাল ও আবু সাঈদ হামলার দৃশ্য ভিডিও করা ছাড়াও হামলায় উদ্বুদ্ধ ও সহায়তা করে।

আসামি মাসুদ রানারও হামলায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।আগের দিন ঢাকার বাইরে থেকে কামরাঙ্গীর চরে যাওয়ার পথে গাবতলীতে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে তারা এএসআই ইব্রাহীম মোল্লাকে হত্যা করে এবং ঘটনাস্থল থেকে মাসুদ রানা গ্রেপ্তার হয়।

মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত আবদুল্লাহ বাকি ওরফে নোমান ছিলেন হোসেনি দালানে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। হামলার আগে ১০ অক্টোবর তারা বৈঠক করে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে।

বোমা হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল জাহিদ, আরমান ও কবির। কবির ও জাহিদ ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে। হামলার পর আশ্রয়ের জন্য কামরাঙ্গীরচরে বাসা ভাড়া করেন আরমান ও রুবেল। ঘটনাস্থলে আরমান পরপর পাঁচটি বোমা ছুঁড়ে।

এই মামলার অভিযোগপত্রে রাষ্ট্র পক্ষে ৪৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।