logo
আপডেট : ১৫ মার্চ, ২০২২ ১১:২৫
দাদা-দাদির পাশে চিরনিদ্রায় হাদিসুর
বরগুনা প্রতিনিধি

দাদা-দাদির পাশে চিরনিদ্রায় হাদিসুর

জানাজা শেষে কবরস্থানে নেওয়া হচ্ছে হাদিসুরের লাশ

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলায় নিহত নৌ প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে বেতাগীর কদমতলা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাদা-দাদির কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কদমতলা গ্রামে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মানুষের ঢল নামে।

জানাজায় ইমামতি করেন বেতাগী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জিয়াউল হক।

এ সময় বরগুনা ১ আসনের সাংসদ ধীরেন্দ্রনাথ দেবনাথ শম্ভু, বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান, ইউএনও মো. সুহৃদ সালেহীন, পৌর মেয়র এবিএম গোলাম কবির, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের মহাব্যবস্থাপক আবু সুফিয়ানসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন: হাদিসুরের মরদেহ নিয়ে বাড়ির পথে স্বজনরা

এর আগে সোমবার রাত ৯টার দিকে হাদিসুরের লাশ তার বাড়ি পৌঁছায়। এ সময় সেখানে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের স্বজনরা।

লাশ দেখে হাদিসুরর মা রাশিদা বেগম, বাবা আব্দুর রাজ্জাক ও ভাই তরিকুল ইসলাম বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

সোমবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হাদিসুরের মরদেহ হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছায়। লাশ বুঝে নেন হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুর ১ টার দিকে লাশ নিয়ে হাদিসুরের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তারা ।

হাদিসুরের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা বাজারসংলগ্ন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে বোন সবার বড়। এরপর হাদিসুর রহমান। ছোট দুই ভাই লেখাপড়া করছেন। হাদিসুর রহমানই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

আরো পড়ুন: অবশেষে এলো হাদিসুরের মরদেহ

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি ড্যানিশ কোম্পানি ডেল্টা করপোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। জাহাজটি মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে যায়। সেখান থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল। 

এর আগেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন ক্রু নিয়ে অলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে জাহাজটি। ২ মার্চ রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। পরদিন ৩ মার্চ জাহাজটি থেকে ২৮ নাবিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তাদের নিরাপদ বাঙ্কারে রাখা হয়।