logo
আপডেট : ১৭ মার্চ, ২০২২ ০৫:১৯
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
জুভেন্টাসকে হতাশায় ডুবিয়ে ভিয়ারিয়াল কো. ফাইনালে
ক্রীড়া ডেস্ক

জুভেন্টাসকে হতাশায় ডুবিয়ে ভিয়ারিয়াল কো. ফাইনালে

স্বপ্নেও হয়তো এমনটা ভাবেনি জুভেন্টাস। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন যে এভাবে চুরমার হয়ে যাবে তা হয়তো কল্পনাও করতে পারেনি। পথটা একেবারে মসৃণ ছিল তা নয়, তবে খুব যে কঠিন ছিল তাও নয়। তবে এমন পরিণতি কেউ হয়তো কল্পনাতেও আনেনি। অথচ হয়েছে তাই। তাদেরকে উড়িয়ে দিয়ে স্প্যানিশ ক্লাব ভিয়ারিয়াল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে। বুধবার রাতে জুভেন্টাসের মাঠে অনুষ্ঠিত খেলায় তারা ৩-০ গোলে জয় পেয়েছে। ৪-১ গোল গড়ে তারা পৌঁছে গেছে শেষ আটে।

জেরার্ড মোরেনো, পাউ টরেস ও আরনাউট ডানজুমা গোল তিনটি করেছেন। মাত্র ১২ মিনিটের ব্যবধানে এ তিন গোল হজম করতে হয় জুভেন্টাসকে। ভিয়ারিয়াল প্রথম গোল পেয়েছে ৭৮ মিনিটে। ৮৫ ও ৯২ মিনিটে বাকি দুই গোল হজম করে তারা।

অ্যাওয়ে ম্যাচে গোলের বাড়তি সুবিধা এখন আর নেই। তবে ভিয়ারিয়ালের মাঠে অনুষ্ঠিত প্রথম লেগের খেলায় ১-১ গোলে ড্র করার জুভেন্টাস সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল। নিজেদের মাঠের খেলায় তারা সহজেই জয় নিয়ে শেষ আটে পৌঁছাবে এমনটা ভাবার মানুষের অভাব ছিল না। তাদের ভাবনার সঙ্গে মিল রেখেই খেলা শুরু করেছিল জুভেন্টাস। একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিল ভিয়ারিয়ালকে। কিন্তু খেলার শেষ ১২ মিনিটে সব কিছু কেমন জানি ভোজবাজির মতো পাল্টে যায়। তবে জেরার্ড মোরেনোর গোলের আগ পর্যন্ত ভিয়ারিয়াল ছিল একেবারে অসহায়। জুভেন্টাসের রক্ষণভাগের সামনে তারা কোনো প্রতিক্রিয়ায় দেখাতে পারেনি। মোরেনোর গোলের আগ পর্যন্ত তারা জুভেন্টাসের পোস্ট লক্ষ্য করে একটা শটও নেওয়ার সুযোগ পায়নি।

বদলি খেলোয়াড় মোরেনো ৭৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। ড্যানিয়েলে রুগানি নিয়ম বহিভর্’তভাবে ফ্রান্সিস কোকোয়েলিনকে ফাউল করায় ভিয়ারিয়াল পেনাল্টি পায়। গোল করার সহজ এ সুযোগটি নষ্ট করেননি তিনি। কয়েক মিনিট পরই ডিফেন্ডার টরেস ব্যবধান দ্বিগুন করেন। কর্নার কিক থেকে পাওয়া বল কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে নেন। এ গোলের জন্য জুভেন্টাসের ডিফেন্ডাররা দায় এড়াতে পারেন না। জুভেন্টাসের দুর্ভাগ্য তখনো শেষ হয়নি। শেষ বাঁশি বাজার আগে আবারো তাদের গোল হজমের লজ্জায় ডুবতে হয়। এবারো পেনাল্টি থেকে গোল হজম করে তারা। হ্যান্ডবলের কারণে এ পেনাল্টি পেয়েছিল ভিয়ারিয়াল।

এ জয়ের মাঝ দিয়ে ২০০৮-০৯ মৌসুমের পর এবারই প্রথম ভিয়ারিয়াল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে খেলার গৌরব অর্জন করেছে।

প্রথম লেগে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকার পরও বিদায় নেওয়ায় নিজেদের দুর্ভাগা ভাবতে পারে জুভেন্টাস। একের পর এক সুযোগ নষ্ট হয়েছে তাদের। অনেকে ভাগ্যকেও দোষারোপ করতে পারে। প্রথম লেগের গোলদাতা ডুসান ভøাহোভিচ একাধিকবার গোল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। একবার তার শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। দুইবার তাকে ভিয়ারিয়ালের গোলরক্ষক গেরো রুলি হতাশ করেন। রুলি চেলসির সাবেক স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতাকেও হতাশ করেন।

ভিয়ারিয়ালের কোচ আর্সেনালের সাবেক ম্যানেজার উনাই ইমেরির কৌশলের কাছে হেরে গেছেন জুভেন্টাসের কোচ। ইমেরি দ্বিতীয়ার্ধে গোল করা নয়, বরং গোল থেকে দলকে নিজেকে রক্ষার সব ব্যবস্থা করেছিলেন। রক্ষণভাগে শক্তি বাড়িয়েছিলেন। ফলে এ সময় আক্রমণের তেমন একটা সুযোগ পায়নি। হঠাৎ এক আক্রমণ থেকে তারা গোলের সুযোগ পেয়ে যায়। ভিয়ারিয়ালের পাল্টা আক্রমণ রুখতে গিয়ে ফাউল করে বসে জুভেন্টাস। রেফারি ভিএআর দেখে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। মোরেনোর শট গোলরক্ষক দুই হাতে ঠেকালেও দলকে গোল থেকে বাঁচাতে পারেননি। এ গোলে ভিয়ারিয়াল যেনো গোলের পথ চিনে যায় এবং একে একে আরো দুই গোল পায় তারা।

এ নিয়ে জুভেন্টাস টানা তিন বছর শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিল। অথচ ঘরোয়া লিগে সাত নম্বরে থাকা ভিয়ারিয়াল সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখলো। গত বছর তারা ইউরোপা লিগের ফাইনালে খেলেছে। শুধু তাই নয়, ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল। ১-১ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচে ট্রাইব্রেকারে ১১-১০ ব্যবধানে জিতেছিল। ম্যানইউয়ের গোলরক্ষক ডেভিড গিয়া গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।