logo
আপডেট : ২১ মার্চ, ২০২২ ১৮:০১
পর্দানশীন নারীদের রাষ্ট্রীয় অধিকার নিশ্চিতের দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক

পর্দানশীন নারীদের রাষ্ট্রীয় অধিকার নিশ্চিতের দাবি

জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হ‌লে সংবাদ সম্মেলন করেছে রাজারবাগ দরবার শরীফের মহিলা আনজুমান

পর্দানশীন নারীদের রাষ্ট্রীয় সুবিধা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে রাজারবাগ দরবার শরীফের মহিলা আনজুমান।

সোমবার (২১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হ‌লে এক সংবাদ সম্মেলন এ দা‌বি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন-রাজারবাগ দরবার শরীফের মহিলা আনজুমানের সদস্য ও আহবায়ক শারমিন ইয়াসমিন, মহিলা আনজুমানের সদস্য সুমাইয়া আহমদ, মাশহুরা ফিরদাউসী।

শারমিন ইয়াসমিন বলেন, বাংলাদেশে অসংখ্য পর্দানশীন নারী আছেন, যারা পবিত্র কোরআন-সুন্নাহ অনুসারে পরিপূর্ণ পর্দা করার চেষ্টা করেন। তারা কোন ’গায়েরে মাহরাম’কে চেহারা দেখান না। অথচ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন কাগজ করার সময় সনাক্ত করার জন্য চেহারা খুলে ছবি তুলতে হয় এবং 'গায়েরে মাহরাম' পুরুষকে চেহারা দেখিয়ে নিশ্চিত করতে হয়। তারা তা কর‌তে পার‌ছে না ব‌লে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ কোনো সরকারী কাগজ তৈরী করতে পারছেন না এবং নাগরিক অধিকারও লাভ করতে পারছেন না।

তি‌নি ব‌লেন, পরিস্থিতি বেশি জটিল হয়ে উঠছে বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা নারী বা প্রবাসীদের স্ত্রীদের জন্য। কারণ সামান্য সহযোগিতার জন্য তারা নিকটস্থ মাহরাম পুরুষকে কাছে পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় সন্তানদের নিয়ে জীবনধারণ তাদের জন্য বেশ জটিল হয়ে উঠেছে।

বক্তারা বলেন, কোরআন-সুন্নাহ অনুসারে পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে মুখ খুলে ছবি তুলতে রাজী না হওয়ায় অনেক পর্দানশীন নারী রাষ্ট্রীয় সুবিধা ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

তারা ব‌লেন, আধুনিক যুগে বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হয়ে উঠেছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি। প্রযুক্তিনির্ভর এ পদ্ধতিতে সনাক্তকরণ প্রায় শতভাগ নির্ভুল। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সনাক্তকরণে কখনোই দুই ব্যক্তির মধ্যে মিল পাওয়া যায় না। বয়স বা শারীরিক অবস্থার সাথেও এই পদ্ধতিতে তারতম্য ঘটে না। পৃথিবীতে যদি ৭০০ কোটি মানুষ থাকে, তবে একজনের সাথে অন্যজনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট কখনোই মিলবে না। তাই আধুনিক যুগে অপরাধী সনান্তকরণে ফিঙ্গারপ্রিন্ট অধিক গ্রহণযোগ্য ও নির্ভুল মাধ্যম হিসেবে বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। ছবি দিয়ে সনাক্তকরণ পদ্ধতি ত্রুটিযুক্ত হওয়ার কারণেই 'জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০'- এ ছবি দিয়ে সনাক্তকরণের বদলে বায়োমেট্রিক সনাক্তকরণকেই গ্রহণ করা হয়েছে। তারপরও ছবির মত একটি পুরাতন ও ত্রুটিযুদ্ধ পদ্ধতি ধরে রাখার জন্য অসংখ্য পর্দানশীন নারীর মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে, বঞ্চিত করা হচ্ছে রাষ্ট্রের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি থেকে, যা একটি অমানবিক বিষয়।

সংবাদ সম্মেলনে সরকার ও প্রশাসনের কাছে ২টি দাবী উত্থাপন করা হয়-

-পর্দানশীন নারীদের সনাক্তকরণে পর্দার বিধান লঙ্ঘন হয় না, এমন পদ্ধতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র, জমি রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ওএমএস কার্ড, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা কার্ড ইত্যাদি তৈরীর ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে সনাক্তকরণে পুরাতন ও ত্রুটিপূর্ণ ছবি পদ্ধতির বদলে আধুনিক ও আইনসম্মত বায়োমেট্রিক পদ্ধতি (যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট) ব্যবহার করতে পারে।

-সরকারি অফিস বা কার্যালয়ে পর্দানশীন নারীদের সাথে যোগাযোগ, আদান-প্রদান বা সনাক্তকরণের জন্য নারী কর্মকর্তা/কর্মচারির ব্যবস্থা রাখতে হবে।