পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে আনা এক অনাস্থা প্রস্তাবের কারণে দেশটিতে এক রাজনৈতিক সংকট দানা বাঁধছে। এ মাসের শুরুর দিকে বিরোধীদলগুলোর একটি জোট এই অনাস্থা প্রস্তাব আনে। এই জোট বলছে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি থেকে একদল এমপি বেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন।
আগামী শুক্রবার পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাবটির ওপর ভোট হতে পারে। ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর এটিই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জন্য সবচেয়ে কঠিন রাজনৈতিক পরীক্ষা হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইমরান খান তার দলত্যাগী এমপিদের পার্টিতে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ফিরে এলে তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যেভাবে একজন পিতা তার সন্তানদের ক্ষমা করেন।
বিরোধীদল অভিযোগ করছে, ইমরান খান অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থ হয়েছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইমরান খান।
পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে হলে ইমরান খানকে অন্তত ১৭২ জন এমপির সমর্থন পেতে হবে। এর মধ্যে তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের আসন সংখ্যা ১৫৫, সঙ্গে আরো আছে তার কোয়ালিশন অংশীদারদের সমর্থন। অন্যদিকে নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগসহ পাকিস্তানের বিরোধীদলগুলোর মোট আসন সংখ্যা ১৬৩।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, অনাস্থা প্রস্তাব পাওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে অধিবেশন আহ্বান করতে হয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকারকে। এই ১৪ দিনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে সোমবার। তবে স্পিকারের অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় ওআইসির এক সম্মেলনের কারণে এ তারিখ কয়েকদিন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
পাকিস্তানের বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকদের উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইমরান খানের সঙ্গে পাকিস্তানের শক্তিধর সামরিক বাহিনীর সুসম্পর্কে চিড় ধরেছে, যাদের সমর্থন দেশটির যে কোনো রাজনৈতিক দলেরই ক্ষমতা যাওয়ার জন্য দরকার। ইমরান খান এবং সামরিক বাহিনী উভয়েই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
চার বছর আগে ইমরান খানের দল ক্ষমতাসীন হয়। পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তানের ইতিহাসে এ পর্যন্ত কোনো প্রধানমন্ত্রীই তার মেয়াদ পুরো করতে পারেননি। ইমরান খান একজন সাবেক ক্রিকেটার এবং ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন।