দক্ষিণ আফ্রিকায় দাপুটে পারফরম্যান্সে সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেছেন, এই জয় আমারসহ আমাদের ক্যারিয়ারেরই সেরা অর্জন।
বুধবার (২৩ মার্চ) দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়নে তৃতীয় ওয়ানডেতে মাত্র ২৬.৩ ওভার ব্যাট করেই ম্যাচটি জিতে নেয় বাংলাদেশ। এর পর সংবাদ সম্মেলনে এসে উপস্থাপকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তামিম।
খেলার শুরুর আগে সিরিজটি ছিল ১-১ সমতায়। এই সেঞ্চুরিয়নেই প্রথম ম্যাচ জিতে এগেয়ে থাকা বাংলাদেশকে পরের ম্যাচে হারিয়ে সমতায় ফিরেছিল আয়োজকরা। তাই শেষ ম্যাচটি ছিল সিরিজ নির্ধারণী। এমন ম্যাচের শুরুটা যা হওয়া দরকার তার পুরোটাই করে দেখিয়েছে টাইগাররা। শুরুতে তাসকিন-মিরাজদের আগ্রাসী বোলিং তোপে ৩৭ ওভারেই গুটিয়ে যায় আয়োজকরা। দিতে পারে মাত্র ১৫৫ রানের টার্গেট।
ছোট এই টার্গেটের পেছনে ছুটতে শুরুর দুই ওভার সাবধানে খেললেও পরে আফ্রিকার ভয়ংকর বোলারদের পাড়ার মাঠের বোলারে নামিয়ে আনেন তামিম-লিটন দাস। উদ্বোধনী জুটিতে ১২৭ রান করে ফেলেন দুজনে। একটুর জন্য অর্ধশতক বঞ্চিত হন লিটন, ৪৮ রানে যখন ফেরেন দল তখন জয় থেকে মাত্র কয়েক পা দূরে। তবে অপর প্রান্তে অধিনায়ক তামিম ইকবালের ব্যাট হাসছিল রানের ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তামিম। ১৪ বাউন্ডারিতে ৮২ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন তামিম। সঙ্গী সাকিব অপরাজিত থাকেন ২০ বলে ১৮ রান করে।
এমন খেলায় সিরিজের ট্রফি উঠেছে টাইগারদের হাতেই। এর আগে তিন সিরিজের আট ম্যাচে খালি হাতে ফেরা বাংলাদেশের এই নৈপূণ্যকে তামিম দেখলেন তার ও টিমমেটদের ক্যারিয়ারেরই সেরা অর্জন হিসেবে। এ পারফরম্যান্সের জন্য দলের খেলোয়াড়সহ কোচিং স্টাফদের উজাড় প্রশংসা করতে ভোলেননি তামিম। ধন্যবাদ জানান বিসিবিসহ দেশবাসীকে।
ম্যাচের শেষে প্রতিক্রিয়ায় তামিমের কাছে সাকিবের ব্যাপারে জানতে চান উপস্থাপক। জবাবে তামিম বলেন, সাকিবের দলে ফেরাতে বাংলাদেশ দল অনেক শক্তিশালী হয়েছে এবং সবচেয়ে বড় কথা দলের জয়ের আকাঙ্ক্ষা আরো বেড়ে গিয়েছিল। এমনকি দুই সন্তান, মা ও শাশুড়ি হাসপাতালে থাকার পরেও দেশে না ফিরে তৃতীয় ম্যাচটা সাকিব খেলতে চেয়েছিল শুধু দলের সিরিজ জয়ের স্বার্থেই। এটা ছিল তার (সাকিবের) দলের প্রতি নিবেদন। সেই ফল আমরা পেয়েছি।
মাঠের দর্শকদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তামিম। বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে যেন ঢাকাতেই খেলছি। আমাদের কোচ রাসেল বলছিল, ওরা (দর্শকরা) আজ দ্বাদশ খেলোয়াড়ের ভূমিকা পালন করছে। এসময় দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা মাঠে এসে সারাক্ষণ উজ্জীবিত করায় দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তামিম।
এ ম্যাচে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন তাসকিন আহমেদ। তিন ম্যাচে ৮ উইকেট শিকার করে প্লেয়ার অব দ্য সিরিজও হয়েছেন তিনিই। তার প্রসঙ্গে তামিম বলেন, ফিটনেসে অসম্ভব উন্নতি করেছে সে। প্রচুর পরিশ্রমক করেছে। এর ফল সে পেল। এজন্য কোচিং স্টাফদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান তামিম। পুরস্কার গ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় তাসকিনও বলে গেছেন একই ধরনের কথা।