দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলায় সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক। একই সাথে দুই ভাই ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (বহিষ্কৃত) মো. সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি (বহিষ্কৃত) ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলের জামিন আবেদন নাকচ করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুল হাসান ভোরের আকাশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাহবুবুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শুনানি শেষে তিন আসামির জামিনের আবেদন খারিজ করেন। আগামি ১৭ এপ্রিল মামলার অভিযোগ বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন বিচারক।
মামলার অভিযোগ শুনানির দিনে অসামিদের পক্ষে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। আইনজীবী শাহীনুর ইসলামসহ অপর একজন আসামির পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী।
শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, রুবেল ও বরকতের বিরুদ্ধে অভিযোগ সুষ্পষ্ট নয়। বলা হচ্ছে, তারা দুই হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন। এর মধ্যে ১৬শ' কোটি টাকার টেন্ডারের কাজ করেছেন তারা। তারা কাজগুলো আইন অনুযায়ী করেছেন। বাকী টাকার অভিযোগও সুনির্দিষ্ট নয়। আসামিরা প্রায় দুই বছর ধরে জেলে আছেন। তাই তারা জামিন পেতে পারেন।
বাবরের আইনজীবী শুনানিতে বলেন, বাবরের বিরুদ্ধে মামলায় অন্য আসামিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের অভিযোগ রয়েছে। তিনি আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলেন, আর অন্য আসামিরা ফরিদপুরে ত্রাসের রাজত্ব করলো, ফরিদপুরের প্রশাসন কি করছিল। প্রশাসনের ছত্রছায়ায় যদি হয় তবে প্রশাসনের লোকেরা আসামি নয় কেন? যে অভিযোগ তা সিআইডি তদন্ত করার এখতিয়ার রাখে না। শুধু রাজনৈতিক কারণেই তিনি আসামি হয়েছেন। তার বয়স ৬৫ বছর। তিনি অসুস্থ। জামিন পেলে পালিয়ে যাবেন না।
রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুল হাসান জামিনের বিরোধীতা করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন খারিজ করেছে।
মামলার অপর ৭ আসামি হলেন- ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, এএইচএম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।
নথি থেকে জানা গেছে, ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৬ জুন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা গত বছরের ৩ মার্চ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন।