ধর্ষণের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আকিফ আহমেদকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় সংগঠনের ঢাবি শাখার গৃহীত পদক্ষেপকে ‘সংসদের ব্যর্থতা, অপরিণামদর্শিতা’ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদ।
বৃহস্পতিবার (২৪মার্চ) ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, আজ বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী সভায় আকিফ আহমেদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে কয়েকটি মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের বর্তমান কমিটি স্থগিত করা; ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাংগঠনিক ইমেইল ও ফেসবুক পেইজ কেন্দ্রীয় সংসদ বরাবর বুঝিয়ে দেওয়া; অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের জন্য বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দাবি এবং অভিযোগকারী যদি কোনো প্রকার আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চান সেক্ষেত্রে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্র ইউনিয়নের নিপীড়নবিরোধী সেল এ ঘটনায় তদন্ত করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী বরাবর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মূল্যায়নে যা বলা হয়:
সোমবার (২১ মার্চ) ধর্ষণের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আকিফ আহমেদকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিষদ। সংগঠনের ফেসবুক পেজে এক বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।
তবে এত বড় ঘটনায় শাখা সংগঠনের দায়সারা দায়িত্ববোধে প্রচণ্ড হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে কেন্দ্রীয় সংগঠন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ এতদিনেও ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত আকিফ আহমেদের ছাত্রত্ব বাতিলের কোনো দাবি করেনি। এর মধ্য দিয়ে অভিযুক্তের প্রতি সুস্পষ্ট নমনীয়তা প্রদর্শন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ফেসবুক পোস্টে ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে কিছু বিষয়ের অবতারণা করা হয় যার ফলে ভিক্টিমকে ব্লেমিং ( ঘটনার শিকার ব্যক্তির ওপর দায় চাপানো) এর সুযোগ করে দেওয়া হয় এবং তাতে অভিযুক্তের অপরাধকে হালকা করে উপস্থাপনের চেষ্টা দেখা গেছে।
এত বড় ঘটনায় কোনো প্রকার আনুষ্ঠানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তি আকারে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। কেবল ফেসবুক পেজে পোস্ট করে দায় সারার চেষ্টা হয় যাতে সংগঠনের প্যাড, দপ্তর সম্পাদকের স্বাক্ষর ও তারিখ ব্যবহার করা হয়নি।
সর্বশেষ তৃতীয় আরেকটি পোস্টের অবতারণা করে প্রথম পোস্টে দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্যের পক্ষেই যুক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয় এবং একই সাথে ভিক্টিমের পরিচয় প্রকাশ পায় এমন তথ্য সরবরাহ করা হয়। ভিক্টিমের পরিচয় প্রকাশের জন্য কোনো প্রকার ক্ষমা প্রার্থনা করে কোনো বিবৃতি দেয়নি ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাবি সংসদ।