নারী বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ একেবারেই নতুন। অন্যদিকে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ অস্ট্রেলিয়া। একদিকে বাংলাদেশের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা মাত্র ৪৭টি; অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া খেলেছে ৩৪৭টি। স্বাভাবিকভাবেই একপেশে লড়াই হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ব্যাটে-বলে দারুণ লড়াই জমিয়ে তুলেছিল। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ আর পেরে ওঠেনি। হারতে হয়েছে। ৫ উইকেটে হেরেছে তারা। বাংলাদেশের করা ১৩৫ রান অস্ট্রেলিয়া ৩২.১ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে টপকে যায়। এ জয়ের ফলে আট দলের টুর্নামেন্টে অস্ট্রেলিয়া এখনো অপরাজিত থাকার কীর্তি ধরে রেখেছে। ৭ ম্যাচের ৭টিতে তারা জয় পেয়েছে। ৭ ম্যাচ থেকে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা শীর্ষে রয়েছে। অন্যদিকে ৬ ম্যাচে বাংলাদেশের একটা পঞ্চম হার। ২ পয়েন্ট নিয়ে তারা সপ্তম স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের আর একটা খেলা বাকি রয়েছে।
অন্যসব ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয় যতটা সহজে ছিল, বাংলাদেশ ততটা সহজে জয় পেতে দেয়নি। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচটি ৪৩ ওভারে নির্ধারিত হওয়া ম্যাচে টস জিতে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যাট হাতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ভালোই ছিল। মুর্শিদা খাতুন ও শারমিন আখতার দারুণ সূচনা এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরই একটা ঝড় বয়ে যায়। রুমানা আহমদ, লতা মণ্ডল ও সালমা খাতুন সে ঝড়টা ভালোভাবেই সামাল দিয়ে ৬ উইকেট হারিয়ে দলকে ১৩৫ রান এনে দেন। প্রথম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশ ৩৩ রান করেছিল। শারমিন আখতার ২৪ রান করেন। মুরশিদার সংগ্রহ ছিল ১২ রান। লতা করেছেন ৩৩। এছাড়া রুমানার ১৫ ও সালমার ১৫ রান ছিল উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ তাদের প্রথম ৫০ রান করে ৯০ বলে। এরপরই বাংলাদেশের রান সংগ্রহের গতিটা ধীর হয়ে যায়। পরের ৫০ করতে ১৩০ রান মোকাবিলা করতে হয় বাংলাদেশকে। মূলত এ ঘটনা বাংলাদেশের সংগ্রহকে সমৃদ্ধ হতে দেয়নি।
তবে বল হাতে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল চমৎকার। বিশেষ করে মাত্র ২৬ রানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ৩ উইকেট তুলে নিয়ে সবাইকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছিল সালমা খাতুন। অসাধারণ বোলিং করে একে তিনি ৩ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। সালমার সঙ্গে নাহিদা খাতুন হাত মিলিয়ে আরো একটা উইকেট তুলে নেন। ফলে ৪১ রানে ৪ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। এ অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার মিডলঅর্ডার ব্যাটার বেথ মুনি দৃঢ়হাতে বিপর্যয় রুখে দেন। পাশে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডকে। তারা দুজনেই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। বেথ মুনি ৯৫ বলে ৬৬ রান করেন। অন্যদিকে সাদারল্যান্ড ৫৪ বলে ২৬ করেন। মুনি তার ইনিংসটি ৫টি চারে সাজান। ম্যাচসেরাও হন তিনি। মূলত তার ব্যাটিং সালমা খাতুনের আনন্দ কেড়ে নেয়। সালমা খাতুন শেষ পর্যন্ত ৯ ওভারে ২৩ রানে ৩ উইকেট পান।