পেঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতি কিছুটা কমলেও ভোজ্যতেলের বাজারে এখনও হ-য-ব-র-ল অবস্থা। সরকার ভোজ্যতেলের দাম কমানোর নির্দেশনা দিলেও সে বিষয়ে তেলকল মালিকরা ভীষণ উদাসীন। ক’দিন আগেই যারা তিন-চারদিনের ব্যবধানে লেবেল পাল্টে দাম বাড়িয়েই যাচ্ছিল তারা এখন আর সরকার নির্ধারিত দামে তেল সরবরাহ করছে না। তেল কোম্পানিগুলোকে কোনো চাপও দিচ্ছে না সরকার। এদিকে, এবার দাম বাড়ানোর সুযোগ নিচ্ছে প্রসাধন ও গৃহস্থালী পণ্য উৎপাদক কোম্পানিগুলো। এক্ষেত্রে আবার এগিয়ে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ইউনিলিভার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিদপ্তরের নানামুখী উদ্যোগের ফলে বাজারে ভোজ্যতেলের দামও কমতে শুরু করলেও নতুন দামের বোতলজাত সয়াবিন তেল এখনো বাজারে আসেনি। তবে রমজান উপলক্ষে এক কোটি পরিবারকে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপণ্য সরবরাহ করার সিদ্ধান্তে বাজারে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এ সিদ্ধান্তের কারণে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও এখন স্বস্তিকর অবস্থার দিকে নামছে।
ভোজ্যতেলের বিষয়ে দোকানিরা জানিয়েছেন, সয়াবিন তেলের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির পর এখন দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, গত মাসে প্রতি তিন চারদিন পর পর তেল কোম্পানিগুলো নতুন লেবেলের বোতল বাজারে ছাড়লেও সরকার দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়ায় এখন নিশ্চুপ। পুরনো লেবেলের তেলের বোতলগুলোই এখন বাজারে আছে। সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো নতুন দামের পণ্য বাজারে এখনও ছাড়েনি। খুচরা বাজারের চেইন শপ ‘স্বপ্ন’ ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে প্রতি ক্রেতাকে একটিমাত্র পাঁচ লিটার তেলের বোতল কেনার জন্য অনুরোধ জানিয়ে নোটিশ টানানো হয়েছে। দাম রাখা হয়েছে ৭৯৫ টাকা। তেল বাজারে ক্রেতাদের এজন্য ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে।
জানা গেছে, গত সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে মিল ও রিফাইনারি মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়। বলা হয়, আগামী ঈদুল ফিতর পর্যন্ত এ দাম বহাল থাকবে। নতুন দামে এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬০ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৭৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর একদিন পর খোলা তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১৩৩ টাকা লিটার।
সরকারের এ উদ্যোগে ভোক্তাদের আশ্বস্তও করতে পারছে না। কারণ, মিল মালিক, সরবরাহকারী ও দোকানিদের মধ্যে সরকারের নির্দেশ মানার কোন লক্ষণ যাচ্ছে না।
শান্তিনগর বাজারের মুদির দোকানি মো. সোহাগ জানান, তেলের দাম বাড়লেও আমাদের যে লাভ, কমলেও একই লাভ। এতে ডিলার বা কোম্পানি যে দাম নির্ধারণ করে তা পূর্বের শতাংশ হিসেবে (পাঁচ লিটারে ২০ টাকা) ঠিক রাখা হচ্ছে। দোকানিদের পাইকারি দামে কোন পরিবর্তন আসে না।
শুক্রবার ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, আমদানি প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নতুন আলু কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকা, গাজরের কেজি ৩০ টাকা, লালশাক আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, আমদানি রসুনের কেজি ১৩০ টাকা, দেশি রসুন প্রতি কেজি ৭৮ টাকা, দেশি আদা ৭৮ টাকা কেজি এবং আমদানি আদার কেজি ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা কেজি, করলার কেজি ৮০ টাকা, মিষ্টিকুমড়ার কেজি ৩৫ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকা, লেবুর হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা গেছে।