logo
আপডেট : ২৬ মার্চ, ২০২২ ০৮:৩৮
যেভাবে দেশজুড়ে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা
‘শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান’
রাজন ভট্টাচার্য

‘শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান’

ছবি: সংগৃহীত

২৫ মার্চ কালরাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরুর পর মধ্যরাতে গ্রেপ্তারের আগে, ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ঘোষণাটি বঙ্গবন্ধুর বাসভবন থেকে প্রথমে টেলিফোনে বিভিন্ন নেতা ও সূত্রের কাছে পাঠানো হয়।

ইপিআরের (পরে বিডিআর, বর্তমানে বিজিবি) ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে চট্টগ্রামে পাঠানো হয় সারা দেশে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয় মগবাজার ভিএইচএফ অয়্যারলেস স্টেশনে।

সব জায়গায় বার্তা পাঠিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণাটি দ্রুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ দেশে-বিদেশে পৌঁছে দিতে বলা হয়। বিভিন্ন ওয়্যারলেস স্টেশনের বাঙালি দেশপ্রেমিক কর্মীরা বার্তাটি ছড়িয়ে দেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তখন পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে বহির্বিশ্বের টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ছিল। একমাত্র ওয়্যারলেস শিপিং চ্যানেলের মাধ্যমে সমুদ্রে জাহাজগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ ছিল। ট্রান্সমিটারের মাধ্যমেও বার্তাটি ঢাকা থেকে প্রচার করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বার্তাটি ছিল ইংরেজিতে লেখা। বাংলা করে যে বার্তাটি বিভিন্নভাবে প্রচার করা হয়, তার রূপ ছিল এ রকম ‘মাতৃভূমিকে রক্ষা করো। আল্লাহ সহায় হোন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিতে পিলখানা ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছে এবং শহরের লোকদের হত্যা করছে। ঢাকা, চট্টগ্রামের রাস্তায় যুদ্ধ চলছে।

আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ, দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। আপনাদের পাশে এসে যুদ্ধ করার জন্য পুলিশ, ইপিআর, বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও আনসারদের সাহায্য চান।

কোনো আপস নাই, জয় আমাদের, পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রুকে বিতাড়িত করুন। সকল আওয়ামী লীগ নেতা, কর্মী এবং অন্যান্য দেশপ্রেমিক ও স্বাধীনতাপ্রিয় লোকদের এ সংবাদ পৌঁছে দিন। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুন। জয় বাংলা। ’ শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ কর্মী হাজি মোহাম্মদ মোরশেদ ২৫ মার্চ রাতে টেলিফোনে সর্বত্র বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠান। পরে সে রাতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মোরশেদকেও গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়।

চট্টগ্রামে পৌঁছানো বার্তা ছড়ায় সারা বিশ্বে

ঐতিহাসিক বার্তাটি রাতের মধ্যেই পৌঁছে যায় চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নেতা জহুর আহমদ চৌধুরীর বাসার ৮০৭৮৫ নম্বরে ২৫ মার্চ রাতে একটি কল আসে। ফোনটি ধরেন তাঁর স্ত্রী, মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ডা. নুরুন্নাহার জহুর।

তিনি বার্তাটি রাত ৩টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডর ছলিমপুর আন্তর্জাতিক মেরিটাইম ওয়্যারলেস স্টেশনের কোস্টাল অপারেশনাল বিভাগের কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেন। বার্তাটি লিখে নেন টেলিফোন রেডিও টেকনিশিয়ান জালাল আহমেদ।

রাতের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটির হাতে লেখা কপি চট্টগ্রাম সিটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান, নেতা জহুর আহমদ চৌধুরী, এম আর সিদ্দিকীসহ কয়েকজনের কাছে পৌঁছে বলে এম এ হান্নান জানিয়েছেন গবেষক মুহাম্মদ শামসুল হককে।

জহুর আহমদ চৌধুরীর বাসায় আসা বার্তাটি ওই রাতেই হাজারি গলির বিনোদা ভবনে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নিয়ে বাংলায় অনুবাদ করে সাইক্লোস্টাইল মেশিনে কপি করে কর্মীদের কাছে পৌঁছানো হয় বলেও তিনি জানান।

পরে আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরীর পাথরঘাটার বাসার সাইক্লোস্টাইল মেশিনেও বার্তাটি কপি করে বিলিয়ে দেওয়া হয়।

ছলিমপুর ওয়্যারলেস স্টেশনের কর্মী আবদুল কাদের গবেষক মুহাম্মদ শামসুল হককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, সকাল প্রায় সাড়ে ৬টা-৭টার দিকে বার্তাটি ইন্ডিয়ান জাহাজ ‘ভিভি গিরি’, অন্য বিদেশি জাহাজ ‘সালভিটা’, ইউনাইটেড নেশনের জাহাজ ‘মিনি লা-ট্রিয়া’সহ বেশ কয়েকটি জাহাজে ডুপ্লেক্স চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন।

সকাল ৯টায় ভারতের বেতার আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্র থেকে সংবাদ প্রচার করা হয়, ঢাকা ও অন্যান্য অঞ্চলে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে।

২৬ মার্চ ভোরের মধ্যে হাতে পেয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত বাঙালি কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা প্রচার শুরু করেন। কেউ মাইকযোগে তা প্রচার করেন, কেউ সাইক্লোস্টাইল করে ছড়িয়ে দেন।

২৬ মার্চ সকালে পটিয়ার ইন্দ্রপুল এলাকায় বিলি হওয়া একটি কাগজ পেয়েছিলেন বলে জানান পটিয়ার বাসিন্দা, ‘ইতিহাসের খসড়া’ পত্রিকার সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল হক। তিনি জানান, তখন তাঁর বয়স ছিল ১৫ বছর।

সকাল ১০টায় নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মালেক উকিল বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার তারবার্তা জনসমাবেশে পাঠ করেন। পৌনে ২টার সময় চট্টগ্রামের কালুরঘাট ট্রান্সমিটার থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান।

সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে এই ঘোষণা আবার প্রচার করেন আবুল কাশেম সন্দ্বীপ। ২৭ মার্চ ঘোষণটি পাঠ করেন মেজর জিয়াউর রহমান।

মগবাজার ওয়্যারলেস স্টেশন থেকে ছাড়াল বার্তা

বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার লিখিত একটি কপি ২৬ মার্চ রাত সাড়ে ৪টা-৫টার দিকে মগবাজার ভিএইচএফ (ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি) ওয়্যারলেস স্টেশনে পৌঁছে যায়। এটি গ্রহণ করেছিলেন সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুল কাইউম ও ইঞ্জিনিয়ার সুপারভাইজার মেজবাহ উদ্দিন।

তাঁরা বার্তাটি সকালেই চট্টগ্রামের ছলিমপুর স্টেশনসহ দেশের বিভিন্ন ওয়্যারলেস স্টেশনে পাঠিয়ে দেন। আবদুল কাইউম গবেষককে দেওয়া সাক্ষৎকারে জানান, ভোররাতে সাদা ফুলস্কেপ কাগজে লেখা বার্তাটি তাঁদের কাছে আসে।

একজন লোক সেটা পৌঁছে দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি মেসেজ পাঠিয়েছেন। তখন মগবাজার ভিএইচএফ ওয়্যারলেস স্টেশনের সঙ্গে বাংলাদেশের সব গুরুত্বপূর্ণ অংশের যোগাযোগ ছিল। সকাল ৬টার দিকে ওয়্যারলেসযোগে পয়েন্ট টু পয়েন্ট, বিশেষ করে যেসব স্থানে ওয়্যারলেস স্টেশন চালু ছিল, সেসব জায়গায় বার্তাটি পাঠিয়ে দিই।

পিলখানা থেকে ঘোষণা প্রচারকারী শহীদ হলেন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সেলিনা পারভীন ওরফে রীতা গবেষককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পিলখানা থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা পিলখানায় ইপিআর সিগন্যাল কোরের সুবেদার মেজর শওকত আলী। ওই রাতেই তাঁকে হত্যা করে পাকিস্তানিরা।

বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহকারী হাজি মোরশেদ ৩২ নম্বর বাড়িতে ছিলেন বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হওয়ার সময় পর্যন্ত। ট্রান্সমিটারে বঙ্গবন্ধুর বার্তা প্রচার সম্পর্কে তিনি জানান, “...রাত ১১টা বেজে গেল, ১২টা প্রায় বাজে বাজে, এমন সময় একটা টেলিফোন আসল। বলে, ‘আমি বলধা গার্ডেন থেকে বলছি।

মেসেজ পাঠানো হয়ে গিয়েছে, মেশিন নিয়ে কী করব?’ আমি মুজিব ভাইয়ের কাছে দৌড়ে গিয়ে তাঁর কথা বললাম। বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘মেশিনটা ভেঙে ফেলে পালিয়ে যেতে বল। ’ আমি তাঁকে (বার্তা প্রেরক) সে কথা বললাম। ”

পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক কমান্ডার টিক্কা খানের গণসংযোগ কর্মকর্তা সিদ্দিক সালিক তাঁর উইটনেস টু সারেন্ডার বইয়ে ট্রান্সমিটারে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে রেকর্ড করা স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছেন বলে লিখেছেন।

২০১৬ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশের সংবিধানের উপক্রমণিকায় এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানে বাংলার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জনসভায় এক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বর্ণনা করিয়া স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হইবার ডাক দেন এবং ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু স্বকন্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এমন তথ্য নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এরকম একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, একাত্তর সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি আর্মি ঢাকা রেডিও’র দখল নিলেও, গোপন তিনটি ট্রান্সমিটার আগে থেকে প্রস্তুত রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

সেগুলোতে টেলিফোনে নিজের ঘোষণা রেকর্ড করান তিনি। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বার্তা প্রচারের ব্যবস্থা করেন। নিবন্ধে আরো বলা হয়, চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র চালু হওয়ার অন্তত ১৮ ঘন্টা আগে গোপন রেডিও মনিটর করে শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার সংবাদ প্রকাশ করে বিশ্ব গণমাধ্যম।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজীর জনসংযোগ অফিসারের দায়িত্ব পালনকারী সিদ্দিক সালিক-এর ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থেও এ সংক্রান্ত একটি বিবরণের সত্যতা পাওয়া যায়। সিদ্দিক সালিক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জেনারেল নিয়াজীর পাশেই ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অনুগত পাকিস্তানি হিসাবে পাক সামরিক জান্তার চক্রান্ত তিনি খুব কাছে থেকেই দেখেছেন।

২৫ মার্চ, অপারেশন সার্চ লাইট শুরুর মুহূর্ত নিয়ে তিনি ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থে লিখেন “এভাবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সামরিক কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। এমন আঘাত হানার নির্ধারিত মুহূর্ত (এইচ-আওয়ার) পর্যন্ত স্থির থাকার চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেল। নরকের দরজা উন্মুক্ত হয়ে গেল।

যখন প্রথম গুলিটি বর্ষিত হলো, ঠিক সেই মুহূর্তে পাকিস্তান রেডিও’র সরকারি তরঙ্গের (ওয়েব লেংনথ) কাছাকাছি একটি তরঙ্গ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষীণ কণ্ঠস্বর ভেসে এলো। ওই কন্ঠের বাণী মনে হলো আগেই রেকর্ড করে রাখা হয়েছিল। তাতে শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানকে গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করলেন।”

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ ডকুমেন্টস-এ ওই ঘোষণার পূর্ণ বিবরণ প্রকাশিত হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ঘোষণায় বলা হয়, এই-ই হয়তো আপনাদের জন্য আমার শেষ বাণী হতে পারে।

আজকে থেকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি- যে যেখানেই খাকুন, যে অবস্থাতেই থাকুন এবং হাতে যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। ততদিন পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান- যতদিন না দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর শেষ সৈনিকটি বাংলাদেশের মাটি থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হচ্ছে।”

ড. মোহাম্মদ হান্নান এ ব্যাপারে তার ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিখেন, বঙ্গবন্ধুর সাথে বৈঠকের পর নুরুল উল্লা সঙ্গে সঙ্গে এসে বার্তাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য শিক্ষকদের বলেন।

শুরু হয়ে যায় স্বাধীন বাংলার প্রথম রেডিও ট্রান্সমিটার তৈরির কাজ। বিভাগীয় প্রধান ড. জহুরুল হকসহ প্রায় সকল শিক্ষক ৯ দিন কাজ করার পর একটি ট্রান্সমিটার তৈরি করেন। এর সম্প্রচার ক্ষমতা বা শক্তি ছিল প্রায় বাংলাদেশব্যাপী। শর্ট ওয়েভে এর শব্দ ধরা যেতো।