logo
আপডেট : ৩১ মার্চ, ২০২২ ১৬:৩৬
আট মাসে চার বার বেইলি ব্রিজ ভাঙন, যানচলাচল বন্ধ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

আট মাসে চার বার বেইলি ব্রিজ ভাঙন, যানচলাচল বন্ধ

টাঙ্গাইল-আরিচা মহাসড়কের নাগরপুর উপজেলার ভাদ্রা ইউনিয়নে টেংরিপাড়া গ্রামে নয়নদী শাখা খালের ওপর বেইলি ব্রিজটি ভেঙে গেছে। বুধবার (৩০ মার্চ) সকালে পেঁয়াজভর্তি একটি ট্রাক পারাপারের সময় ব্রিজের পাটাতন ভেঙে যায়। এতে আরিচা থেকে আসা টাঙ্গাইলগামী ট্রাকটি আটকে যায়।

আটকে যাওয়া ট্রাকটি উদ্ধার করা গেলেও বুধবার সকাল থেকে বিছিন্ন রয়েছে দুই পারের যানচলাচল। এ নিয়ে গত আট মাসে চার বার এই বেইলি ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটলো।

জানা যায়, ২০১৩ সালে ধলেশ্বরী সেতু চালু হওয়ার পর এই সড়ক ব্যবহার বেড়ে যায় কয়েকগুণ। ফলে টাঙ্গাইল থেকে আরিচা ও পাটুরিয়াঘাট যেতে ফেরি পারাপারের জন্য বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ। প্রতিদিন কয়েকশ’ ছোট-বড় যানবাহন এই ব্রিজের উপর দিয়ে টাঙ্গাইল-আরিচা-পাটুরিয়া এলাকায় চলাচল করছে।

এত গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেইলি সেতুর অবস্থা নাজুক হওয়ায় প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলে ঝুঁকি নিয়ে। সেতুটিতে স্টিলের পাটাতন ক্ষয়ে গেছে। ফলে মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহন প্রায়ই চাকা পিছলে দুর্ঘটনার শিকার হয়। ভারী যানবাহন উঠলে রীতিমতো কেঁপে ওঠে পুরো সেতু। এছাড়া ব্রিজ দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ হলেও তা উপেক্ষা করে প্রতিদিন কয়েকশ’ যান চলাচল করছে। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

স্থানীয়রা জানায়, গত বছরের ২৩ আগস্ট বালুভর্তি ট্রাক পারাপারের সময় পাটাতন ভেঙে ব্রিজের মাঝখানেই আটকে যায়, গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর ব্রিজের অন্য স্থানে আবারো দুর্ঘটনা ঘটে। চলতি বছরে ৮ মার্চ একই স্থানে আবারও দুর্ঘটনা ঘটে। সংস্কারের দুইদিন পর গত ১০ মার্চ তৃতীয়বারের মতো ব্রিজটি ভেঙে যায়।

সর্বশেষ ৩১ মার্চ, বুধবার ব্রিজে পেঁয়াজভর্তি ট্রাক উঠলে পাটাতন ভেঙে যায়। এখন ব্রিজ দ্রুত মেরামত না করলে দু’পারের কয়েক হাজার মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে ভাদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, ‘চলতি মাসেই দুই বার রিপেয়ারিং করা হয়েছে। কিন্তু কাজের মান ভালো না হওয়ায় আবারো বেইলি ব্রিজ ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটে। ব্রিজের উপর দিয়ে আট টনের বেশি মালামাল বোঝাই ট্রাক চলাচল বন্ধ করতে না পারলে বারবারই এ রকম দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই ব্রিজ।’

নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওহিদুজ্জামান মিলন জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে মেরামতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। সাময়িকভাবে মানুষ চলাচলের উপযোগী করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলিউল হোসেন বলেন, ‘ব্রিজের উপর দিয়ে অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে প্রতিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। টেংরীপাড়া ব্রিজেই বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা চলছে। মেকানিকদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে।’ ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করা হবে বলে তিনি জানান।