logo
আপডেট : ৩১ মার্চ, ২০২২ ১৭:০৬
ইনজেকশন পুশ করে শিশুপুত্রকে হত্যার অভিযোগ, বাবা আটক
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

ইনজেকশন পুশ করে শিশুপুত্রকে হত্যার অভিযোগ, বাবা আটক

চুয়াডাঙ্গা শহরে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে আড়াই মাস বয়সী এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইখলাছ উদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে আটক করা হয়।

ইখলাছের বাড়ি আলমডাঙ্গা উপজেলার আঠারোখাদা গ্রামে। ইখলাছ দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মাঝেরপাড়ার পলাশ উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন। নিহতের নাম ইকবাল হোসেন।

জানা যায়, গত বুধবার সকাল ৮টার দিকে মাঝের পাড়ায় শিশু ইকবাল অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। সেখানে নেওয়ার পথে মারা যায় শিশুটি। এরপর সন্ধ্যায় খবর পেয়ে আঠারোখাদা গ্রামে পৌঁছে নিহত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ইকবালের মা মিতা খাতুনের অভিযোগ, তার আগে এক বিয়ে হয়েছিল। পারিবারিক কলহের কারণে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। এদিকে প্রথম স্ত্রীর কোনো সন্তান না হওয়ায় গত চার বছর আগে ইখলাছ তাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে ইখলাছ তাকে সন্দেহ করতে থাকে। পরে তাদের কোলজুড়ে এক ছেলে সন্তান আসে। কিন্তু ওই ছেলে তার জন্মের নয় বলে জানায় ইখলাছ।

মিতা খাতুন আরো বলেন, বুধবার সকালে বাড়ির কাজ করছিলাম। সে সময় ইখলাছ ছেলেকে কোলে নেয়। এর কিছুক্ষণ পর ছেলে কেঁদে ওঠে। পরে গিয়ে দেখি, ছেলের বাম পা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। জানতে চাইলে ইখলাছ বলে, টিকা দেওয়ার স্থান থেকে রক্ত বের হচ্ছে। পরে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডাক্তার জানায়, টিকা দেওয়ার স্থান থেকে কোনো রক্ত বের হয়নি। ছেলের বাম পায়ের অন্য স্থানে একটি ইনজেকশন পুশ করার চিহ্ন রয়েছে। সেখানে ফুলে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, ‘দুপুরে শিশুটিকে আমার কাছে নিয়ে আসা হয়। তখন শিশুটির অবস্থা ভালো ছিল না, খিঁচুনি হচ্ছিল। তার মা বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করার অভিযোগ করছিলেন। শিশুটির বাম পায়ে একাধিক ইনজেকশন পুশের চিহ্ন ছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘শিশুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। তবে, শিশুটির পায়ে কোনো ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে কি না তা ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। বেঁচে থাকলে রক্ত পরীক্ষা করে বলা যেত। তার আগেই শিশুটি মারা গেছে।’

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, সন্ধ্যায় খবর পেয়ে আঠারোখাদা গ্রামে পৌঁছে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক করা হয়েছে শিশুটির বাবা ইখলাছকে। মিতা খাতুন বাদী হয়ে সদর থানায় তার স্বামী ইখলাছের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।