logo
আপডেট : ৩১ মার্চ, ২০২২ ২১:৩৪
ব্যবসা সহায়ক উন্নয়ন বাজেট চায় বেসরকারিখাত, সবার সহযোগিতা চাইলেন পরিকল্পনামন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যবসা সহায়ক উন্নয়ন বাজেট চায় বেসরকারিখাত, সবার সহযোগিতা চাইলেন পরিকল্পনামন্ত্রী

সহজে ব্যবসা পরিচালন এবং নীতি সহায়তার ধারাবাহিকতা বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য ২০২২-২০২৩ সালে ব্যবসা সহায়ক ও উন্নয়ন বাজেটের দাবি জানিয়েছেন বেরকারি খাতের প্রতিনিধিরা।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) ঢাকা চেম্বার, সমকাল এবং চ্যানেল ২৪ যৌথভাবে আয়োজিত লাইভ ‘প্রাক-বাজেট আলোচনা: প্রেক্ষিত বেসরকারিখাত’ শীর্ষক সভায় অংশগ্রহণ করে তারা এ দাবি জানান।

সভায় বেসরকারি খাতের নেতৃবৃন্দরা ব্যবসা সহায়ক পরিবেশের উন্নয়ন, নীতি সংষ্কার ও নতুন নতুন নীতিমালা গ্রহণ, কর কাঠামোর সহজীকরণ, কর্পোরেট করের হার হ্রাস, সিএমএসএমই খাতের বিকাশ, পণ্য বহুমুখীকরণে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা প্রদান, টেকসই বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন, লজিস্টিক খাতের বিকাশে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা প্রদান এবং নীতি সহায়তার ধারাবাহিকতা প্রভৃতি বিষয়গুলো আগামী বাজেটে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া বাজার হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সঞ্চালনায় সভায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী, এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) এমপি এবং এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান, আগামী বাজেটে লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কোম্পানির কর্পোরেট কর হার ২.৫ শতাংশ হ্রাস, কর্পোরেট ডিভিডেন্ডের আয়ার ওপর বিদ্যমান ২০ শতাংশ করের পরিবর্তে ১০ শতাংশ কর নির্ধারণ এবং বার্ষিক টার্নওভারের ঊর্ধ্বসীমা ৪ কোটি টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেন।

এছাড়া- প্রান্তিক বিনিয়োগ ও সঞ্চয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমানতের সুদ বাড়ানোর জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ব্যয় হ্রাস, সিএমএসএমই খাতের সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণ এবং এ খাতে বার্ষিক টার্নওভারের ভিত্তিতে ব্যাংক ঋণ প্রদান, দেশের পুঁজিবাজারকে বিকশিত করতে সুসুক’র মতো অন্যান্য সিকিউরিটাইজড বন্ড প্রবর্তন এবং গ্রীনফিল্ড অবকাঠমো প্রকল্পে পাঁচ বছরের জন্য কর অব্যাহতির প্রস্তাব করেন ডিসিসিআই সভাপতি।

তিনি চামড়া খাতে বন্ড লাইসেন্স প্রদানে দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাসকরণ, সম্ভাবনাময় নতুন শিল্পখাতের বিকাশের পাশাপাশি রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিত শিল্পের জন্য বেজা’র লীজ রেন্ট-এর ওপর ভ্যাট অব্যাহতির দাবি জানান। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি দেশের বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় বেসরকারিখাতের বিনিয়োগকে উৎসাহিতকরণ, লজিস্টিক নীতির দ্রুত বাস্তবায়ন এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে সব সেবা দ্রুত সময়ে নিশ্চিতকরণের প্রস্তাব করেন।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেন, বেসরকারিখাতের উদ্যম ও উদ্দীপনাই দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিচ্ছে এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসলে সরকারের উন্নয়নের অভিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে ইতোমধ্যে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম গ্রহণ করেছে, যার সুফল শীঘ্রই দেশবাসী ভোগ করতে পারবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী দেশের ভবিষ্যৎ তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নে ‘ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ’ উন্নয়নের ওপর তিনি জোরারোপ করেন, যার মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় বিনিয়োগ বাড়বে।

তিনি উল্লেখ করেন, জার্মানি ও আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি ক্ষুদ্র ও মাঝারী খাত, তাই আমাদেরকে স্থানীয় এসএমই উদ্যোক্তাদের বিকাশের প্রতি আরো বেশি নজর দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

আয়োজকরা জানান, অনুষ্ঠানে ‘আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), ‘আর্থিক খাত’, ‘শিল্প ও বাণিজ্য’ এবং ‘অবকাঠামো’-এ চারটি সেশনের আলোচনায় দেশের বেসরকারিখাতের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

‘আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট)’ সেশনের আলোচনায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ-এর চেয়ারম্যান ও ডিসিসিআই’র প্রাক্তন সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম, এমসিসিআই সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর সাবেক সদস্য মো. আলমগীর হোসেন বক্তব্য রাখেন।