অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসটা যখন শেষ হলো তখন স্কোর বোর্ডে রান ৮ উইকেটে ৩৪৮। ম্যাচটা তখনই শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু দলটা যখন পাকিস্তান এবং দলনেতা বাবর আজম তখন বিষয়টা যে একটু ভিন্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই। লাহোরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ শেষে জয়োৎসব কলা দলটার নাম পাকিস্তান। এক ওভার হাতে রেখে স্বাগতিক দল অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহকে টপকে গেছে। চার উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যাওয়ায় ৬ উইকেটে জয় পেয়েছে পাকিস্তান। এ জয়ের ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে ১-১ এ সমতা।
আগের ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও পাকিস্তান টস জিতেছিল। উভয় ম্যাচে পাকিস্তান অধিনায়ক প্রতিপক্ষকে আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দেন। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৩১৩ রান করলেও পাকিস্তান তা টপকাতে পারেনি। ফলে দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দেখে পাকিস্তানের আরও একটা হারের শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু অধিনায়ক বাবর আজম ও ইমাম উল হকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে রেকর্ড গড়ে জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান। দ্ইু ব্যাটারের কল্যাণে পাকিস্তান অনেক রেকর্ডের পাতা নতুন করে লিখতে বাধ্য করেছে। ১০৬ রান করেছেন ওপেনার ইমাম উল হক। আর বাবর আজমের সংগহ ছিল ১১৪ রান।
রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়েছে পাকিস্তান। যে কোনো দলের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে পাকিস্তানের জয়ের রেকর্ড এটা। এর আগে এ রেকর্ড ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০১৪ সালে মিরপুরে ৩২৭ রান তাড়া করে জিতেছিল তারা। জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া বাবর নিজেও রেকর্ডের পাতায় স্থান করে নিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েছেন তিনি। পাকিস্তানের অধিনায়কের এটা ছিল ১৫তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। আগের ম্যাচে তিন অংকের যাদুকরী রান করেছিলেন ইমাম। ফলে প্রথম পাকিস্তানী হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা দ্ইু সেঞ্চুরি করার কীর্তি দেখিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানের জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম উল হক। প্রথম উইকেটে তারা ১১৮ রান করেন। ৬৪ বলে ৬৭ রান করার পর ফখর জামানের বিদায়ের পর ইমাম উল হকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন বাবর আজম। তারা দুইজনেই দলকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর দায়িত্ব ভালোভাবেই পালন করেছেন। শেষ পর্যন্ত ক্রিজে তারা থাকতে পারেননি। তবে ১১১ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে দলের সংগ্রহকে সমৃদ্ধ করেন। ৯৭ বলে ১০৬ রান করেন ইমাম। ছয় বাউন্ডারি ও তিন ওভার বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তার ইনিংস। অন্যদিকে ৮৩ বলে ১১৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন বাবর। ১১ বাউন্ডারির পাশাপাশি একটি ওভার বাউন্ডারি ছিল তার ইনিংসে। বাবর যখন আউট হয়েছেন তখন পাকিস্তান জয় থেকে ৪০ রান দূরে। মোহাম্মদ রিজওয়ান (২৩) ও খুশদিল শাহ (২৭) সে পথটা ভালোভাবেই পার করে নিয়েছেন।
এর আগে পাকিস্তানের আমন্ত্রণে ব্যাট হাতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের তৃতীয় বলেই অ্যারন ফিঞ্চকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। তবে দ্বিতীয় উইকেটে অস্ট্রেলিয়া সেই ধাক্কা ভালোভাবে সামাল দিয়ে ওঠে। ট্রাভিস হেড ও বেন ম্যাকডরমট ১৬২ রানের জুটি গড়েন। হেড ৮৯ ও ম্যাকডরমট ১০৪ রান করেন। তাদের আউটের পর মার্নাস লাবুসেন (৫৯) ও মার্কাস স্টয়নিস (৪৯) রানের চাকাটা ভালোভাবেই সচল রেখেছিলেন। তবে শেষ দিকে শিন অ্যাবটের ১৬ বলে ২৮ রান অস্ট্রেলিয়াকে ৩৪৮ রানে নিয়ে যায়। রান উৎসবের ম্যঅচে সফল বোলার ছিলেন পাকিস্তানের শাহীন শাহ আফ্রিদি। ১০ ওভাওে ৬৩ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। তবে ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাবর আজম।