logo
আপডেট : ২ এপ্রিল, ২০২২ ১১:৫৩
রেলের জমিতে মহিলা লীগ নেত্রীর ৪ বাড়ি
সোহান মাহমুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

রেলের জমিতে মহিলা লীগ নেত্রীর ৪ বাড়ি

রেলওয়ের জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ করেছেন মহিলা লীগের নেত্রী হালিমা খাতুন

রেলবন্দর স্থাপনে তিনি করছেন আন্দোলন। তবে রেলওয়ের জায়গায়ই দখল করে করেছেন চার বাড়ি। এর মধ্যে একটি বাড়িতে থাকেন নিজে। বাকি তিনটি দিয়েছেন ভাড়া। এ কথা নির্দ্বিধায় স্বীকারও করছেন তিনি।

বলছি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর পৌর এলাকায় রেলওয়ের জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ করা জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিমা খাতুনের কথা। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করলেও দখলকারী প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে পারছে না। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিগগিরই রেলের জমি উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে।

শুধু হালিমা খাতুন নয়, রহনপুর রেলস্টেশনের আশপাশে রেলের প্রায় ৩৭৮ দশমিক ৮৮ একর জমি দখল হয়েছে। এসব জমি দখল করে গড়ে উঠেছে বাড়ি, দোকানপাট ও মার্কেটসহ নানা অবৈধ স্থাপনা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযানে নামলেও অজানা কারণে তা আর সম্পন্ন হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রাচীনতম ব্রিটিশ শাসনামলের একটি রেলওয়ে স্টেশন হচ্ছে রহনপুর। এই স্টেশন দিয়েই ভারত ও নেপালের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ হয় বাংলাদেশের। এ স্টেশন দিয়ে পাথর, গম ও সারসহ বিভিন্ন পণ্য আসা-যাওয়া হয়।

ব্যাপক সম্ভাবনা থাকায় রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনকে নিয়ে রয়েছে বহুমুখী পরিকল্পনা। এ পথে নেপালে যাত্রী আসা-যাওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টি মাথায় রেখে গত বছর সে দেশের রাষ্ট্রদূত রেলস্টেশনটি পরিদর্শন করেন। ওই সময় তিনি সরাসরি নেপালে যাত্রীবাহী ট্রেন নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

স্থানীয়রা জানান, রহনপুর রেলস্টেশনের জমি দখল করে চারটি বাড়ি করেছেন হালিমা খাতুন। একটি বাড়িতে তিনি নিজে বসবাস করছেন। অপর তিন বাড়ি আগে ভাড়া দেয়া থাকলেও বর্তমানে রয়েছে তালাবদ্ধ অবস্থায়। অথচ তিনি চলমান রেলবন্দর বাস্তবায়ন আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ ছাড়াও আশরাফুল হক, সানোয়ার আলীসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রেলের জায়গা দখল করে প্রায় ১০০ বাড়ি করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হালিমা খাতুনের কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিমা খাতুনের অনেক ক্ষমতা। সে রেলওয়ের জমিতে চারটি বাড়ি গড়ে তুলেছেন। ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারে না।

রহনপুর পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান খান বলেন, ‘রেলের জমিতে হালিমা খাতুনের একাধিক বাড়ি রয়েছে বলে লোকমুখে শুনেছি। তার মতো অনেকেই রেলের জমি দখল করে রেখেছেন।’

দখল হওয়া রেলের জমি উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এই পৌর মেয়র।

রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মির্জা কামরুল হক বলেন, ‘রেলওয়ের জমিতে বেশকিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। তার মধ্যে হালিমা খাতুন নামে এক নারীরও কিছু জমি দখল করেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে খাতুন বলেন, ‘রেলওয়ের জমিতে আমারসহ প্রায় একশ’ বাড়ি রয়েছে। সরকারের যখন জমি প্রয়োজন হবে তখন আমরা বাড়ি সরিয়ে নেব।’