logo
আপডেট : ২ এপ্রিল, ২০২২ ১২:০৬
এক বছরের বেশি হিসাব স্থগিত
৩৩ ব্যাংককে ১৫৩০ কোটি টাকা প্রভিশন রাখতে নির্দেশ
জাফর আহমদ

৩৩ ব্যাংককে ১৫৩০ কোটি
টাকা প্রভিশন রাখতে নির্দেশ

প্রতীকী ছবি

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অসম্পূর্ণ হিসাবের সংখ্যা বাড়ছে। এসব হিসাবের বিপরীতে টাকার স্থিতিও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। এতে ৩৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও দেশি-বিদেশি ব্যাংকে সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

এর মধ্যে ৩৩টিতে এক বছরের অধিক সময় ধরে ১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা স্থিতি বিদ্যমান। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাংককে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে।

অসম্পূর্ণ হিসাব হলো ব্যাংকগুলো নির্দিষ্ট হিসাবের বিপরীতে অগ্রিম মুনাফা বা লোকশান আপডেট না করে অসম্পন্ন করে রাখা। এর ফলে ব্যাংকগুলো সব ক্ষেত্রে লাভ বা লোকশান দেখাতে পারছে না।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এসব হিসাবকে স্থগিত হিসাব বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ হিসাবকে সম্পন্ন করার তাগিদ দিলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তা করছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সর্বশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেসব স্থগিত হিসাব এক বছরের বেশি সময় চলমান এসব হিসাবের বিপরীতে স্থিতির সমপরিমাণ অর্থ প্রভিশন হিসাবে সংরক্ষণ করতে হবে। পরবর্তীতে হিসাব সম্পন্ন হলে প্রভিশনের টাকা সরিয়ে নিতে পারবে।

৩৫ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট স্থিতির পরিমাণ ৩ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক বছরের অধিক সময় ধরে স্থগিত এ ধরনের ব্যাংকের সংখ্যা ৩৩টি এবং স্থগিত হিসাবের স্থিতির পরিমাণ ১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। স্থগিত হিসাবের স্থিতির ১০০ ভাগ প্রভিশন রাখতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তথ্যানুযায়ী, এক বছর ও তার বেশি সময় ধরে স্থগিত হিসাবের সর্বোচ্চ স্থিতি রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের। ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির মোট স্থিতির পরিমাণ ২ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা।

এর মধ্যে ৪৩৫ কোটি টাকা স্থিতি এক বছরের বেশি সময় ধরে। ব্যাংকটিকে সমপরিমাণ টাকা প্রভিশন হিসাবে রাখতে হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সর্বোচ্চ স্থিতি যথাক্রমে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ৩২৪ কোটির টাকা ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১৪২ কোটি ৯৯ টাকা।

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ৮১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংকের ৯৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, এবি ব্যাংকের ৩৬.৩৪ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের ২৯.৬৮ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের ৫.৬১ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংকের ১৩.৮০ কোটি টাকা এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৮৮.০৯ কোটি টাকা।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এশিয়ার ২০.২১ কোটি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ১.৯৩ কোটি, দি সিটি ব্যাংক ২.১৫ কোটি, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ৬.০১ কোটি, ঢাকা ব্যাংক ৭.৬২ কোটি, ইস্টার্ন ব্যাংক ১৪.৫৮ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ১৫.৯৭ কোটি, ইসলামী ব্যাংকের ১২.৪৫ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংকের ৩৯.১৮ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১৮.১৫ কোটি, মেঘনা ব্যাংক ১.৯০ কোটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ২.৮৫ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৫.৫২ কোটি, এনসিসি ব্যাংক ৯.০৬ কোটি, ওয়ান ব্যাংক ১.০৮ কোটি, পদ্মা ব্যাংক ১.৬৬ কোটি, পূবালী ব্যাংক ২২.৫৭ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ১.০১ কোটি, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৬.৩৩ কোটি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ৫.৫০ কোটি, সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ২৫.৩৯ কোটি, ট্রাস্ট ব্যাংকের ৫.৮১ কোটি ও ইউনায়টেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ৮.৯১ কোটি টাকা।

দেশে কর্মরত বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে যেসব ব্যাংকের স্থগিত হিসাবের স্থিতি এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান সেসব ব্যাংক হলো, এইচএসবিসি ব্যাংকের ১.২০ কোটি এবং স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের ২৯.৭৫ কোটি টাকা।