রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৯৮ ওয়ার্ডে ১১০ স্থানে ২১টি টিমের মাধ্যমে এডিস মশার লার্ভার সার্ভের কাজ চলছে।
গত ২৪ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ১০ দিনব্যাপী এই কর্মসূচি চলবে আগামীকাল ৩ এপ্রিল পর্যন্ত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মৌসুম পূর্ববর্তী এডিস সার্ভে- ২০২২ এর আওতায় এই কর্মসূচি চলছে।
এডিস মশার লার্ভার সার্ভের কাজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দক্ষ কীটতত্ত্ববিদ এবং ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে করা হচ্ছে। এছাড়া এই কর্মসূচিতে রোগতাত্ত্বিক জরিপের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির লিফলেট বিতরণ ও কাউন্সিলিং করা হচ্ছে।
এডিস মশার লার্ভা ও পিউপার প্রাপ্ত স্থানগুলো জিআইএসের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। উচ্চ ঘনত্ব সম্পন্ন এডিস মশার স্থানগুলো বর্ষা মৌসুম বিবেচনায় বিশেষ ব্যবস্থায় আনার ও প্রাপ্ত তথ্য, উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগীর বিস্তার, এর কারণ নিরূপণ ও এর নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় সরকার, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে সুপারিশ করা হবে।
এডিস মশার লার্ভা ও পিউপার প্রাপ্ত স্থানগুলো সরাসরি পর্যবেক্ষণের জন্য দুই সিটির মশক সুপারভাইজারদেরকে সার্ভে কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভার সার্ভের কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো নাজমুল ইসলাম।
জানা গেছে, এই জরিপে সর্বমোট ৩০০০ বাড়ি সম্পৃক্ত করা হয়েছে। ২১টি কীটতত্ত্ববিদের সমন্বয়ে গঠিত দল এখন পর্যন্ত ২৫২০টি বাড়ি পরিদর্শন করেছে। এর মধ্যে ১১৪টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি মিলেছে। সুতরাং বাড়িতে লার্ভা শনাক্তের হার ৪.২৫ শতাংশ। এই সার্ভের একটি দল উওর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এডাল্ট মশা ধরার কাজে নিয়োজিত আছে। এই পরিণত মশা থেকে ঢাকায় কত ধরনের মশা আছে তা জানা যাবে। এছাড়া মশার মধ্যে কোন ধরনের জীবাণু আছে তা জানা যাবে।
রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা গবেষণা শেষে, মশার ঘনত্ব দিয়ে জিআইএস ম্যাপিং করবে। ফলে উত্তর ও দক্ষিণ সিটির কোন কোন অঞ্চলে মশার ঘনত্ব বেশি তা ম্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে। যা সিটি করপোরেশনের মশক নিধনের কাজে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
বিগত শতাব্দীতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। এর পাশাপাশি বৃষ্টির ধরনেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে আগামী দিনগুলোতে মশক বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়বে। সুতরাং মশক বাহিত রোগ যেমন ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া জাতীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সকল স্টেকহোল্ডারদের আন্তসম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।