logo
আপডেট : ৩ এপ্রিল, ২০২২ ১১:২৭
শিক্ষকস্বল্পতায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত
জুয়েল রানা, টাঙ্গাইল

শিক্ষকস্বল্পতায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

টাঙ্গাইল শিক্ষা ভবন

টাঙ্গাইলের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় দুরবস্থা বিদ্যমান রয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রমের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায়ই এ জেলায় এক হাজার ১২১ জন শিক্ষকের পদ শূন্য। চলমান এ অবস্থায় ৪০৭ জন প্রধান শিক্ষক আর ৭১৪ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এ শূন্যতার ফলে এ জেলায় শিশুশিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনের শুরুতেই যেমন মানসম্মত আর প্রয়োজনীয় শিক্ষা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে; তেমনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

জেলার যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই, সেসব বিদ্যালয়ে সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন করা হয়েছে।
এতে করে বিপুলসংখ্যক শিক্ষকের পদও শূন্য হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া মামলাজনিত কারণে ২১টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে।

টাঙ্গাইল প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে এক হাজার ৫২৩টি। এর মধ্যে এক হাজার ২১৬ জন কর্মরত রয়েছেন। জেলায় সহকারী শিক্ষক রয়েছেন আট হাজার ৪৩৩ জন। কর্মরত রয়েছেন সাত হাজার ৭১৯ জন।

ঘাটাইল উপজেলায় প্রধান শিক্ষক পদে ১৭২ জনের মধ্যে রয়েছেন ১৩৭ জন। সহকারী শিক্ষক পদে শূন্য রয়েছে ৮৮টি পদ। সখিপুরে প্রধান শিক্ষকের ১১টি পদ শূন্য রয়েছে। সহকারী শিক্ষক পদে ৭০৮ জনের মধ্যে রয়েছেন ৬৪৭ জন।

গোপালপুরে প্রধান শিক্ষক পদে ১৬১ জন থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ১১৫ জন। সহকারী শিক্ষক পদে শূন্য রয়েছে ৮৫টি পদ। বাসাইলে প্রধান শিক্ষক পদে শূন্য রয়েছে ১৩টি পদ। সহকারী শিক্ষক পদে ৪৩৫ জনের মধ্যে রয়েছেন ৩৮৪ জন।

সদর উপজেলায় প্রধান শিক্ষক পদে ১৬৩টির মধ্যে ৩১টি পদ খালি রয়েছে। সহকারী শিক্ষক পদে ৮৭৩ পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৮৩৪ জন। দেলদুয়ারে প্রধান শিক্ষকের ২৭টি পদ খালি রয়েছে। সহকারী শিক্ষক পদে ৫২৯টি পদের মধ্যে রয়েছেন ৪৭১ জন।

মির্জাপুরে প্রধান শিক্ষক পদে ১৭০ জনের মধ্যে রয়েছেন ১৪৮ জন। সহকারী শিক্ষক পদে খালি রয়েছে ৯৩টি। কালিহাতীতে প্রধান শিক্ষক পদে শূন্য রয়েছে ৮২টি। সহকারী শিক্ষক পদে শূন্য রয়েছে ২০টি।

মধুপুর উপজেলায় প্রধান শিক্ষ পদে ১১০ জনের মধ্যে রয়েছেন ৯০ জন। খালি রয়েছে ২০টি পদ। সহকারী শিক্ষক পদে ৫৪৯ জনের মধ্যে রয়েছেন ৫০১ জন। শূন্য রয়েছে ৪৮টি পদ। নাগরপুরে প্রধান শিক্ষকের ৪৫টি পদ শূন্য রয়েছে। সহকারী শিক্ষকের ৮৯টি পদ শূন্য রয়েছে।

ভুঞাপুরে প্রধান শিক্ষকের ২৮টি পদ শূন্য রয়েছে। সহকারী শিক্ষক পদে ৫৯৮ জনর মধ্যে রয়েছেন ৫২৯ জন। ৬৯ জনের পদ শূন্য রয়েছে। ধনবাড়িতে প্রধান শিক্ষক পদে ৮৫ জন থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৩৮ জন। আর সহকারী শিক্ষকের ১৩টি পদ শূন্য রয়েছে।

শিক্ষকরা জানান, শিক্ষক কমতি থাকার কারণে পাঠদানে বিশাল ঘাটতি হচ্ছে, যা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব না।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক শূন্যতার কারণে মানসম্মত পাঠদানে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে শিক্ষার গুণগত মান ও কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘদিন প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। এতে পাঠদানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রধান ও সহকারী শিক্ষক শূন্য পদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠনো হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’