কপালে টিপ পরায় নারীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য সুবর্ণা মোস্তাফা।
রোববার (৩ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে সুবর্ণা মোস্তাফা বলেন, একজন নারী টিপ পরতে পারবে না এটা কোন আইনে, সংবিধানে কোথাও লেখা আছে?
এ ঘটনাকে দেশের তথা সব নারী সমাজের জন্য লজ্জাজনক মন্তব্য করে কলেজ শিক্ষিকাকে উত্ত্যক্তকারী অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এখানে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, এমনকি সে বিবাহিত না বিধবা, সেটা বিষয় নয়। একটি মেয়ে টিপ পরেছে। তিনি একজন শিক্ষক। রিকশা থেকে নামার পর দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার ইভ টিজ করেছে। যখন দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে উত্ত্যক্ত ভূমিকায় দেখি, তখন সেটা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর। দলমত-নির্বিশেষে এটি অত্যন্ত ঘৃণিত ঘটনা। বখাটে ছেলেরা স্কুলের বাচ্চা মেয়েদের ইভ টিজ করে। সেই পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত।
তিনি বলেন, আমি সরকারি দলকে রিপ্রেজেন্ট করি, নাকি বিরোধী দলকে রিপ্রেজেন্ট করি বিষয়টা এগুলোর ঊর্ধ্বে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন, মানুষ আগে। মানুষের অধিকার আগে। জাতির পিতা বলেছেন, মানুষকে ভালোবাসতে হবে। মানুষের অধিকার আগে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানান সুবর্ণা মুস্তাফা।
শনিবার ফার্মগেটে একজন কলেজ শিক্ষিকা যখন রিকশা থেকে নেমে তার কলেজের দিকে যাচ্ছিলেন তখন সেখানে কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের (পুলিশ) পক্ষ থেকে তাকে সুস্পষ্টভাবে ইভটিজিং করা হয়েছে। তিনি যখন এর প্রতিবাদ করতে গেছেন তখন তাকে 'তুই-তুকারী' করা হয়েছে। এমন কুৎসিত বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে, যা তিনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারেননি। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মামলাও করেছেন ওই শিক্ষিকা।
সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, আমি অনুরোধ করবো তারা যেন ইমিডিয়েটলি এ বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেন। আশা করি যে মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্তের শিকার হন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। তিনি অভিযোগ করেন, হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন- ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দেন তাকে। ওই মধ্যবয়সী ব্যক্তির গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল। তিনি আরো অভিযোগ করেন, ঘটনার প্রতিবাদ জানালে একপর্যায়ে তার পায়ের ওপর দিয়েই বাইক চালিয়ে চলে যান সেই ব্যক্তি। পরে এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।