logo
আপডেট : ৫ এপ্রিল, ২০২২ ১৫:৩৬
টাকা ছাড়া মিলছে না আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি
বিজন কুমার দাস, দিনাজপুর

টাকা ছাড়া মিলছে না আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি

মুজিববর্ষের উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি

মুজিববর্ষের উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি পাওয়ার কথা প্রকৃত ভূমিহীনদের। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, টাকা ছাড়া পাওয়া যাচ্ছে না আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি। যার কারণে ভূমিহীনদের জায়গায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি পেয়েছেন বিত্তশালীরা। আবার এই বিত্তশালীদের মধ্যে কেউ বাড়ি পেয়ে বিক্রি করেছেন অন্যের কাছে।

এ ঘটনায় দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভূমিহীনরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন।
এছাড়া সোমবার দুপুরে খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আরাজী জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ভূমিহীনরা। মানববন্ধনের আগে তারা বাড়ি বরাদ্দের দাবিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের খালি বাড়িগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

এর আগে গত রোববার ৬০ জন ভূমিহীন স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশিদা আক্তার বরাবার দায়ের করা হয়।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ভেড়ভেড়ি ইউনিয়ন পরিষদের তহশিদার মোকতার হোসেন টংগুয়া বাজারের সেফালী আকতারের কাছে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে আরাজী জাহাঙ্গীপুর গ্রামে বাড়ি বরাদ্দ দিয়েছেন। এই এলাকায় এমন অনেকের কাছে টাকা নিয়ে বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়। অথচ ওই গ্রামের অনেকই ভূমিহীন থাকলেও তাদের মধ্যে কাউকেই বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

এছাড়া আরাজী জাহাঙ্গীপুর গ্রামের প্রায় ১০০টি ভূমিহীন পরিবার রয়েছে। কিন্তু এই এলাকার ভূমিহীনদের বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

ভূমিহীন মরিয়ম বেগম বলেন, আমার কোনো ঘরবাড়ি নেই। মেম্বার আর চেয়ারম্যানের কাছে ঘোরাফেরা করছি। কিন্তু টাকা ছাড়া বাড়ি পাওয়া যায় না। আমি মানুষের বাড়িতে কাজ করে খাই, কোথা থেকে টাকা আনব।

আরেক ভূমিহীন মোস্তফা শেখ জানান, এই গ্রামের অনেক মানুষ টাকা দিয়ে বাড়ি কিনেছে। অনেকে বাড়ি বরাদ্দ নিয়ে বাড়িতে থাকে না। আবার অনেকের বাইরে জমি আছে, কিন্তু তারাও বাড়ি পেয়েছে। অথচ গ্রামের অনেক ভূমিহীন আছে যারা বাড়ি পাচ্ছে না। তিনি সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ সরকারকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে বাড়ি নিয়েছেন।

ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ সরকারের মধ্যস্থতায় ৩০ হাজার টাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি বাড়ি কিনে নিয়েছেন ওই গ্রামে হুসেন আলী। তার ছোট ভাই মোমিনুল ইসলাম বলেন, আমার বড় ভাই সাবেক চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় একটি বাড়ি কিনেছেন। ভাই ঢাকায় থাকেন। তাই আমি এই বাড়িতে থাকি।

এই বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ সরকারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশিদা আক্তার বলেন, ‘আমি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের ডাকা হবে। তারা দোষি প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এছাড়া এর পরের ধাপে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩৫২টি বাড়ি নির্মাণ করা হবে। সেখানে ভূমিহীনদের বরাদ্দ করা হবে বলে জানান তিনি।