টাঙ্গাইল উপজেলার ভূঞাপুরে কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে। আর সে কারণেই পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আগেই আংশিক কাঁচা বোরো ধান কাটতে শুরু করেছেন যমুনা চরাঞ্চলের চাষিরা।
শুকনা মৌসুমে যমুনা চরাঞ্চলে ছোট-বড় মাঝারি অসংখ্য ডোবা তৈরি হয়। আর সেই ডোবাগুলোর চারপাশে এ বোরো ধান চাষ করেন যমুনা চরাঞ্চলের কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চরাঞ্চলের উপরিভাগে সৃষ্ট ডোবাগুলোয় চলতি বছরে ৯০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৪০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে এবং বাকি ৫০ হেক্টর জমির ধান কাটতে শুরু করেছে কৃষক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার অর্জুনা, গাবসারা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের যমুনা চরাঞ্চল এলাকার ছোট-বড় অসংখ্য ডোবার চারপাশে বোরো ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই সেই ধান কেটে ঘওে তুলবেন কৃষক। তবে কিছু জমির ধান কাটলেও অধিকাংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় আংশিক কাঁচা অবস্থায় কাটতে শুরু করেছেন বোরোচাষিরা।
উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ি গ্রামের বোরোচাষি আলতাফ মিয়া বলেন, ‘আমি প্রায় এক বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি। আর এক সপ্তাহের মধ্যে ধান পুরোপুরি পেকে যেত। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে ধানগুলো এখনি কাটতে হচ্ছে। তবে আর এক সপ্তাহ পরে কাটতে পারলে ভালো ধান পাওয়া যেত।’
অর্জুনা ইউনিয়নের কৃষক আজগর আলী বলেন, ‘এ বছর বোরো ধানের আবাদ ভালো হয়েছিল। ইতোমধ্যে কিছু জমির ধান কেটে ফেলেছি। অবশিষ্ট জমির ধান ১০/১২ দিন পরে কাটতে চেয়েছিলাম। হঠাৎ যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে এখনি ধানগুলো কাটতে হচ্ছে। যেখানে ২০ মণ ধানে পেতাম, সেখানে এখন ১৪ থেকে ১৬ মণ ধান পাব।’
গাবসারা ইউনিয়নের বোরোচাষি ফজলুল হক, জাহাঙ্গীর ও মতি মিয়া বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও আমরা বোরো ধান লাগিয়েছি। সারা বছর বোরো ধান দিয়েই সংসার চলে আমাদের। যমুনার তীরবর্তী ডোবাতে লাগানো বোরো ধান কাটতে শুরু করেছি। আর এক সপ্তাহ পরে কাটতে পারলে আরো বেশি ফলন পেতাম।’
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘চলতি বছরে উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলে ৬৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে চরাঞ্চলের উপরিভাগে ৯০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো ধান চাষ করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইতোমধ্যে সেগুলো কাটতে শুরু করেছে কৃষক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। প্রায় ৪০ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। বাকি ৫০ হেক্টর জমির ধান কয়েকদিন পরে কাটার কথা থাকলেও পানি বৃদ্ধির কারণে সেগুলোও কাটতে শুরু করেছেন বোরোচাষিরা।’