logo
আপডেট : ৫ এপ্রিল, ২০২২ ২৩:০৫
পার্লামেন্টের কার্যবিবরণী চেয়েছেন পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট
আবারো পেছাল ইমরানের ভাগ্য নির্ধারণ

আবারো পেছাল ইমরানের ভাগ্য নির্ধারণ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (ফাইল ছবি)

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে ওঠা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে পার্লামেন্টের কার্যবিবরণীর নথি চেয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি পার্লামেন্টে উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলের বৈধতা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি হলেও রায় ঘোষণা হয়নি। শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। খবর: ডন ও জিও নিউজের।

পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি বেঞ্চ এ শুনানির যুক্তিতর্ক শুনছেন। এই ইস্যুতে যৌক্তিক আদেশ দেওয়া হবে বলে সোমবার বলেছিলেন বান্দিয়াল উমর আতা। তবে সেদিন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও অন্য বিরোধীদলের আইনজীবী ফারুক এইচ নায়েকের যুক্তি শুনে শুনানি মুলতুবি করা হয়।

গতকাল শুনানিতে পিপিপির সিনেটর রেজা রাব্বানি আদালতকে পার্লামেন্টের কার্যপ্রণালির দায়মুক্তির আওতা পরীক্ষা করে দেখতে বলেন। তার মতে, যা হয়েছে তাকে কেবল বেসামরিক মার্শাল ল অ্যাখ্যা দেওয়া যায়।

গত রোববার ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল করলে দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়ে ওঠে।

বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ডেপুটি স্পিকার অসাংবিধানিকভাবে অনাস্থা ভোট বাতিল করেছেন। গতকাল সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে অনাস্থা ভোট বাতিলের শুনানি হয়। এতে অংশ নেন দেশটির প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল, বিচারপতি মুনীব আখতার, বিচারপতি আইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম ও বিচারপতি জামাল খান মন্দোখেল।

শুনানিতে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ স্পিকারের কাউন্সিল নাঈম বোখারিকে গত ৩১ মার্চের অধিবেশনের কার্যবিবরণী উপস্থানের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।

বিরোধী দল পিপিপির সিনেটর রাজা রাব্বানী তার যুক্তি উপস্থাপন করেন। বলেন, এটি একটি বেসামরিক অভ্যুত্থান। বিভ্রান্তিকর অভিযোগের মাধ্যমে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গত ২৮ মার্চ উত্থাপন করা হয়েছিল, কিন্তু এরপর জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা হয়। পার্লামেন্টে উপযুক্ত নথিপত্র জমা না দিয়েই অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল করেছেন কাসিম সুরি। ডেপুটি স্পিকারের রুলিং অবৈধ। ভোট না হলে অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা যায় না।

এদিকে রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাশে দাঁড়াল রাশিয়া। এমন অস্থিরতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে মস্কো জানায়, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ওয়াশিংটন আবারও নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। এক বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, গত ২৩-২৪ ফেব্রুয়ারি ইমরান খানের মস্কো সফরের ঘোষণার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের পশ্চিমা সহযোগীরা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ওপর কঠোর চাপ দিতে শুরু করে। এছাড়া ওই সফর বাতিলের আল্টিমেটাম দাবি করে।

তিনি যখন সফরে আসেন (যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক ডোনাল্ড লু) ওয়াশিংটনে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের কাছে ফোন করে অবিলম্বে সফরটি স্থগিত করার দাবি করেন- যা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল।

জাখারোভা বলেন, চলতি বছরের ৭ মার্চ পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদের সঙ্গে এক কথোপকথনে যুক্তরাষ্ট্রের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা (সম্ভবত ডোনাল্ড লু) ইউক্রেনের ঘটনায় পাকিস্তানি নেতৃত্বের ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়ার তীব্র নিন্দা জানান।

তারা স্পষ্ট করে দেন যে, ইমরানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিলেই কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারত্ব সম্ভব। পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে আর কোনো সন্দেহ নেই যে, যুক্তরাষ্ট্র অবাধ্য ইমরান খানকে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের আরেকটি প্রয়াস।