রাজধানীর শাজাহানপুরে এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যার পরিকল্পনার বৈঠকে অংশ নেয়া দুইজনের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে ঢাকার একটি আদালত।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালত শুনানি শেষে ওই রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া দুই আসামি হলেন-নাসির উদ্দিন ওরফে মানিক এবং মোহাম্মদ মারুফ খান।

এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, এ মামলার 'শুটার' মাসুম ৫ এপ্রিল আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দি পর্যালোচনায় দেখা যায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রায় দুই মাস আগে কমলাপুর এলাকায় রুপালী ক্লাবে সন্ত্রাসী মুসার নেতৃত্বে নাসির উদ্দিন গোপন বৈঠকে অংশ নেয়। ওই বৈঠক থেকে হত্যার নীল নকশা করা হয়। মারুফ খানও ওই বৈঠকে অংশ নেন বলে একাধিক গোপন সূত্রে জানা যায়। এছাড়া মারুফ খানের সাথে কুখ্যাত সন্ত্রাসী ফ্রিডম মানিকের যোগাযোগ আছে। ফ্রিডম মানিকের হয়ে মারুফ খান বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করেন এবং ওই টাকা তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে বিতরণ করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী অপর অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেপ্তার, হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র, মোটরসাইকেল উদ্ধারের জন্য এবং মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুরের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আসামিদের পক্ষে আইনজীবী মোস্তাক আহমেদ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধীতা করা হয়।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত দুই আসামির ৫ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।

শাহজাহানপুর থানার কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক শওকত আকবর এই তথ্য ভোরের আকাশকে নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, বুধবার রাতে মুগদা এলাকা থেকে নাসির উদ্দিনকে এবং শাহজাহানপুর এলাকা থেকে মারুফ খানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২৪ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনী কাঁচা বাজার সংলগ্ন রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে শাজাহানপুর আমতলায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং কলেজছাত্রী প্রীতি। এ সময় টিপুর গাড়িচালক গুলিবিদ্ধ হন।

এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত নামাদের আসামি করা হয়।

নথি থেকে জানা যায়, মামলা দায়েরের পর ২৮ মার্চ 'শুটার' মাসুম মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে ৫ এপ্রিল আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে মাসুম। বর্তমানে সে কারাগারে রয়েছে। মামলায় গত ৩ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, আবু সালেহ শিকদার, মো. নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, মো. মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ ও আরফান উল্লাহ দামালের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।