logo
আপডেট : ৭ এপ্রিল, ২০২২ ১৬:১০
গণমাধ্যমকর্মী আইনে সাংবাদিক পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা: সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক

গণমাধ্যমকর্মী আইনে সাংবাদিক পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা: সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচিতে সাংবাদিকরা

‘গণমাধ্যমকর্মী চাকরির শর্তাবলী আইনে সাংবাদিক পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনটিতে কোথাও সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় নেই। সাংবাদিকদের মানসম্মান খর্ব করা ও লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

‘ধারাবাহিকভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, আইসিটি এক্ট, গণমাধ্যম সুরক্ষা আইন এগুলো করা হচ্ছে প্রত্যেকটা জালিয়াতির নির্বাচনের আগে সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল হিসেবে।’

‘এই বশিভূতকরণের আইন সাংবাদিকরা মেনে নিতে পারে না, এই আইন মানি না এবং এ আইনের অধীনে আমরা চলতে পারবো না।’

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১২ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন সাংবাদিক নেতারা।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ফুরকান, যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজু, জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।

সাংবাদিকদের মান মর্যাদা ও স্বার্থবিরোধী 'গণমাধ্যম কর্মী চাকরির শর্তাবলী' আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, আইনটি অনেক দিন হয়ে গেলো কিন্তু কোনো প্রতিবাদ দেখি না।

একটি অংশের প্রতিবাদ আশাও করি না। ২০১৭ সালে আইনটির খসড়া করা হয় তখনো এটি নিয়ে তারা কথা বলেনি, সমর্থন করেছে।

আইনটিতে ইউনিয়ন করার অধিকারও হরণ করা হয়েছে। সাংবাদিক বিরোধী আইন করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

গণমাধ্যম আওয়ামী লীগের যম উল্লেখ করে শওকত মাহমুদ বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে দেখছি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, আইসিটি এক্ট, গণমাধ্যম সুরক্ষা আইন এগুলো করা হচ্ছে প্রত্যেকটা জালিয়াতির নির্বাচনের আগে সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ আর বশিভূত করার জন্য।

আমরা এই বষিভূতকরণের আইন মেনে নিতে পারি না। আমরা এই আইন মানি না এবং এ আইনের অধীনে আমরা চলতে পারবো না।

আমরা শ্রম আইনের অধীনেই চলতে চাই, যেখানে আমাদের চাকরির শর্তাবলী অনেক আলাপ আলোচনার মাধ্যমে স্বীকৃত হয়ে আছে।

আমরা এই আইন চাই না। আমরা সাংবাদিক এই পরিচয় মুছে ফেলার অপচেষ্টা গ্রহণ করব না। গণমাধ্যমের মালিক কে হবে সেটাও আইনে থাকার কথা জানা তিনি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি কবি হাসান হাবিব বলেন, সাংবাদিকদের সাথে আলোচনার নামে প্রহসন করা হয়েছে এই আইনের মাধ্যমে।

আমরা এই আইন বাতিল চাই। আইনটিতে সাংবাদিক পরিচয়টা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে দাবি করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, আমাদের যে শেষ পরিচয় ছিল সাংবাদিক সেই পরিচয়টা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আমাদের গণমাধ্যম কর্মী বানিয়ে দিয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে ক্ষমতায় এসে গণমাধ্যমবিরোধী কাজ করেছে, এখনো চলছে।

আমাদের প্রিয় পত্রিকা আমারদেশ সহ বেশ কিছু গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে এই সরকার। যে আইনটি করা হয়েছে সেখানে কোথাও আমাদের সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় নেই।

তিনি বলেন, এই সরকারকে জনগণ ক্ষমতায় বসায়নি, আমলা, পুলিশরা তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। তাই তারা গণমাধ্যম বিরোধী আইন করছে।

আমরা বিশ্বাস করি, জনগণ বিশ্বাস করে এই সরকারের পতন অবধারিত। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়-বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রুকন বলেন, রাজপথে আমরা আবার দাড়িয়েছি আমাদের পেশা খর্ব করার প্রতিবাদে।

গণমাধ্যম কর্মী আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের মানসম্মান খর্ব করা হয়েছে। আমাদেরকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের কর্মঘণ্টাকে বাড়িয়ে দিয়ে লাগাম টানার চেষ্টা করা হয়েছে।

সাংবাদিক সমাজ কোনো অন্যায় মেনে নেয় না। আমরা এই আইন পাস হতে দিবো না। আর যদি পাস হয় তাহলে আন্দোলনের মাধ্যমে তা বাতিল করতে বাধ্য করাবো।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়-বিএফইউজে এর সভাপতি এম আব্দুল্লাহ বলেন, সাংবাদিকদের জন্য একটি জঘন্য আইনের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছি।

সাংবাদিকদের যাতে চাকরিচ্যুত করা যায়, কণ্ঠরোধ করা যায় সেই আইন করেছে সরকার। এই আইন সংযোজন সংশোধন নয়, আমরা এই আইন বাতিল চাই। এই আইন আমরা মানি না।