logo
আপডেট : ৭ এপ্রিল, ২০২২ ১৮:০৪
সিলেটে দাম বাড়ানোর দাবিতে মাংস বিক্রি বন্ধ
কামরুল ইসলাম মাহি, সিলেট ব্যুরো

সিলেটে দাম বাড়ানোর দাবিতে মাংস বিক্রি বন্ধ

মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা

সিলেটে হঠাৎ করেই গরু ও খাসির মাংস বিক্রি বন্ধ করেছেন ব্যবসায়ীরা। বুধবার (৬ এপ্রিল) গভীর রাতে এক জরুরি বৈঠকে ‘সিলেট সিটি করপোরেশন মাংস ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি’র নেতৃবৃন্দ এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণা দেন। এর পর থেকেই নগরের মাংস দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যায়।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালিক বলেন, ‘সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি নগর এলাকায় গরুর মাংস ৬০০ ও খাসির মাংস ৮৫০ টাকা কেজি নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু আমরা যে দামে গরু বা খাসি কিনি সে অনুযায়ী সিসিক নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করলে আমাদের লোকসান হয়।

‘আমরা গত এক মাস ধরে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসলেও সর্বশেষ সিসিক ওই ৬০০ ও ৮৫০ টাকাই রেখে দেয়। তাই বাধ্য হয়ে আমরা বৃহস্পতিবার থেকে গরু ও খাসির মাংস বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা লোকসান দিয়ে তো আর ব্যবসা করতে পারবো না’, বলেন আবদুল খালিক।

নগরের আম্বারখানা এলাকার মাংস ব্যবসায়ী জসিম উদ্দীন বলেন, ‘সিলেটের বাইরে সিসিক নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি টাকায় গরু ও ছাগলের মাংস বিক্রি হয়। আমরা গরু-ছাগল কিনি সিলেটের বাইরে থেকে। তাই পশুর দাম পড়ে বেশি।

‘আমরা দেশব্যাপী মাংস বিক্রির একটি নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি। ব্যবসায়ীদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সিলেটে গরু ও খাসির মাংস বিক্রি বন্ধ রাখবো’, বলেন তিনি।

মাংস ব্যবসায়ীদের সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা গরুর মাংস ৬৫০ টাকা ও খাসির মাংস ৯৫০ টাকায় বিক্রি করতে চান।

মাংস বিক্রি বন্ধ থাকায় ভোগান্তি

এদিকে পবিত্র রমজান মাসে ব্যবসায়ীরা মাংস বিক্রি বন্ধ রাখায় ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

নগরের বন্দরবাজারের লালবাজারে মাংস কিনতে এসেছেন রহিম মিয়া। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই মাংস বিক্রি বন্ধ হয়েছে। আমি বাসার জন্য তিন কেজি গরুর মাংস কিনতে এসেছি। কিন্তু শহরের কোথাও গরুর মাংস পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়ে মুরগির মাংস কিনেছি।’

এদিকে গরু ও খাসির মাংস বিক্রি বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রেস্টুরেন্ট, খাবার হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টারের মালিক-ব্যবস্থাপকরা। কাস্টমারদের চাহিদা মেটাতে তারা হিমিশিম খাচ্ছেন।

নগরীর পূর্ব জিন্দাবাজার এলাকার রেস্টুরেন্ট ‘গ্র্যান্ড বাফেট এন্ড বেনকুইট হল’র ম্যানেজার উজ্জ্বল আহমদ বলেন, ‘আমরা সিলেটে না পেয়ে সুনামগঞ্জ থেকে গরুর মাংস নিয়ে এসেছি। কী করবো- কাস্টমারকে তো ফেরাতে পারবো না।’

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) বাজার তত্ত্বাবধায়ক ফয়জুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে সিসিকের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে সিটি করপোরেশনে আলোচনা হচ্ছে। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক কুমার রায় চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, সম্প্রতি সিলেটের মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু এ নিয়ে ধর্মঘটের বিষয়টি তার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে গরু-খাসির মাংস বিক্রি বন্ধ থাকলেও স্থিতিশীল রয়েছে মুরগীর মাংসের বাজার। মুরগীর মাংস এখনও আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের বাজারে পোল্ট্রি মুরগী বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি, দেশি মুরগী ৪৫০ টাকা পিস (আড়াই থেকে তিন কেজি) ও পাকিস্তানি কক মুরগী বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ১৩০ টাকায়।