কোনো ধরনের সম্মেলন ছাড়াই পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনৈতিক লেনদেন হয়েছে দাবি করে কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন, সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
গত মঙ্গলবার হঠাৎ করেই ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে জেলা কমিটি। এতে মল্লিক মিলন মাহমুদ তন্ময়কে সভাপতি এবং খন্দকার আরমানকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা ও আবির হাসান শৈশবকে সভাপতি এবং মারুফ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের পৌর কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটি ঘোষণার পরপরই সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস, ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নায়েব আলী বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সাংসদ নূরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ‘স্থানীয় এমপি হিসেবে আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা বা সম্মেলন না করে কমিটি ঘোষণা গর্হিত অপরাধ। যেভাবে কমিটি করা হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগের সংগঠন ও নৌকার ভোট নষ্ট হবে। এই দালালি চলবে না, এখানে টাকা পয়সার খেল আছে। অবৈধ প্রক্রিয়ায় ঘোষিত কমিটি মানি না, মানি না, মানি না।’
নায়েব আলী বিশ্বাস ও আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর দাবিও একই। তারা বলেন, ‘কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করে এবং বিতর্কিত পরিবারের সন্তানদের নিয়ে যে কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়েছে, সেই বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা এমনকি জেলা আওয়ামী লীগও অবগত নয়।’
এ দিকে কমিটি ঘোষণার পর থেকেই বিক্ষুব্দ হয়ে উঠেছেন পদবঞ্চিতরা। কমিটি ঘোষণার দিন রাতেই বিক্ষোভ করেন তারা। পরের দিন ওই কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ অ্যাখ্যায়িত করে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঈশ্বরদী বাজার সড়কে অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে রাস্তা অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে যায়। পরে ছাত্রলীগের কর্মীরা ঘটনাস্থল ছাড়লে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভায়।
কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সাংগঠনিক নিয়ম মেনে ও নেতাকর্মীদের পরামর্শ অনুযায়ী আংশিক এই কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে যারা আছেন, তারা সংগঠনের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা। এখানে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই।’