logo
আপডেট : ১০ এপ্রিল, ২০২২ ১৩:২২
‘ড্রেনের জন্য রমজানে পবিত্রতা রক্ষা দায়’
বিজন কুমার দাস, দিনাজপুর

‘ড্রেনের জন্য রমজানে পবিত্রতা রক্ষা দায়’

‘রমজান মাস, নামাজ তো অনেকেই এই মাসে পড়ে। ড্রেনের নোংরা পানি উঠে থাকে। এর উপর দিয়ে নামাজ পড়তে আসতে হয়। পবিত্রতা কি থাকে, বলেন? ড্রেনের জন্য রমজান মাসে পবিত্রতা রক্ষা করা এখন দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা আজকের নয়, বহুদিন হয়ে আসছে। বর্তমান মেয়র আমাদের জাহাঙ্গীর। সে যেই দলেরই হোক, আমাদের আকুল আবেদন এই ড্রেনটি ঠিক করে দেক।’

ক্ষোভে কথাগুলো বলেছিলেন দিনাজপুর পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আরজু আহমেদ।

শুধু আরজু আহমেদই নন, তার মতোন ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডবাসীর চলাচলের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শহরের কালুর মোড় এলাকার বেহাল ড্রেনেজ ব্যবস্থায়। কালুর মোড় পৌর শহরের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংযোগস্থল। যার পূর্বে রয়েছে জেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড, পশ্চিমে বিআরটিসি কাউন্টার, দক্ষিণে রেলবাজার, পশ্চিমে চৌরাঙ্গী মোড়। আর মোড় এলাকার আশপাশ জুড়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি মেস।

বেহাল ড্রেনেজ ব্যবস্থায় রাস্তায় পানি উপচে যাওয়ায় যাতায়াত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দার পাশপাশি ওই পথ দিয়ে চলাচলকারী জনসাধারণের।

স্থানীয়রা জানান, ড্রেনের নোংরা পানির কারণে চলাচল, নামাজে যাওয়াসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাতেও সমস্যা হয়। বর্ষাকালে প্রায় প্লাবিত হয়ে থাকে গোটা কালুর মোড় এলাকা।

এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজা খাতুন বলেন, প্রতিনিয়ত কালুর মোড়ে ড্রেনের পানি উপচে পড়ে রাস্তা ডুবে যায়। ড্রেনের পানি নাপাক (অশুদ্ধ)। এই রমজান মাসে এমন পানির উপর দিয়ে নামাজে যান অনেক মুসল্লি। এতে কতটুকু পবিত্রতা বজায় থাকে বলেন?

এই বিষয়গুলো জনপ্রতিনিধি, মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও কাউন্সিলরদেরকে একাধিকবার জানালেও এ বিষয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।

স্থানীয় সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব (মেয়র) এই ড্রেন করে ভালো কাজ করেছেন। কিন্তু ড্রেনের সংস্কার করতে হয় এটা হয়তো তিনি জানেন না। আমারা দেখেছি, ময়লা আবর্জনা যদি একবার উঠানো হয় সেখানেই আবার রেখে দেওয়া হয়। এতে করে ড্রেনের ময়লা আবার ড্রেনেই চলে যায়। ফলে ড্রেন বন্ধ হয়ে পানি উঠে আসে রাস্তায়। এই নোংরা পানির উপর দিয়ে যেতে হয় নামাজে। পবিত্র থাকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর আদর্শ কলেজে পড়ালেখা করেন আব্দুল্লাহ রনি। তিনি জানান, তার মতো অনেক শিক্ষার্থীরা আছেন এই জেলা শহরে পড়ালেখা করতে আসেন। প্রতিদিনই তারা কলেজে যান এই রাস্তা দিয়ে। এই রাস্তায় ড্রেনের পানি উঠে থাকে। ড্রেনের পানি নোংরা, অনেক দুর্গন্ধ।

এ বিষয়ে জানতে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের তিনটি ফোন নাম্বারই বন্ধ পাওয়া যায়।

৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ড্রেনটির ব্যাপারে মেয়র সাহেব এর আগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি ড্রেনটি সংস্কার বা নির্মাণ করে দেওয়ার কথা দিয়েছেন কিন্তু এখনও সেটি হয়নি। আমি মেয়রের কাছে ওই ড্রেনটি নির্মাণে প্রকল্প দাখিল করেছি। এছাড়াও পাশের একটি ড্রেন নিজ অর্থায়নে সংস্কার করেছি।’