পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ এবং যুদ্ধের বিরুদ্ধে। ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া বা লিবিয়া যেখানেই যুদ্ধ হয় সেখানে জানমালের ক্ষতি হয় যা আমরা ইউক্রেনে প্রত্যক্ষ করছি। বাংলাদেশ মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। ইউক্রেনে মানবিক সহায়তা প্রদানের পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে বাংলাদেশ।
সোমবার (১১ এপ্রিল) জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপনের প্রেক্ষাপটে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
১১-১৫ এপ্রিল পালাও-এ অনুষ্ঠিতব্য মহাসাগর বিষয়ক সম্মেলনে অংশ নিতে যাওয়ার পথে টোকিওতে যাত্রা বিরতিতে এ বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় টোকিওতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
জাপান ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে জাপানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাপানের নাম বাংলাদেশের জনগনের কাছে অতি প্রিয় এবং জাপান বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগী।
বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, অটোমোবাইলস, আইসিটি, ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রকৌশল, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদির মতো উদীয়মান খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ব্লু ইকোনমি, আইসিটি এবং ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে আরও সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
জাপান সরকারকে আরও বেশি সংখ্যক বৃত্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন ড. মোমেন।
হায়াশি বলেন, জাপান মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশকে বৃত্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রাখবে।
বৈঠকে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা এবং ভাষানচরে স্বেচ্ছায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরসহ গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে তুলে ধরে হয়। বাংলাদেশকে এ পর্যন্ত প্রদেয় সহায়তার পাশাপাশি সমস্যা নিরসনে জাপানের অবিচল প্রতিশ্রুতির জন্য ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
হায়াশি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে জাপান বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে। কারণ এ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রত্যাবাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ইউক্রেন, উত্তর কোরিয়া এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের পরিস্থিতি তুলে ধরে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন হায়াশি।
দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু এবং বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশে এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বৈশ্বিক ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বাংলাদেশে আঞ্চলিক অভিযোজন কেন্দ্রর জন্য জাপানের সহায়তা কামনা করেন।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে ভবিষ্যৎ প্রার্থিতা নিয়েও আলোচনা করেছেন।