logo
আপডেট : ১১ এপ্রিল, ২০২২ ১৮:১৮
ঠাকুরগাঁওয়ে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ ও রানীশংকৈল উপজেলায় ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে ভুট্টা, মরিচসহ অনেক ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোববার বিকালে ঝড়ের সঙ্গে শিলা বৃষ্টি হওয়ায় ৪ হাজার ৮৩৭ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিবেদন তৈরি করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

এর মধ্যে পীরগঞ্জে ৭৯৬ হেক্টর, রানীশংকৈলে ১৯৬৮ হেক্টর ও বালিয়াডাঙ্গীতে ২০৭৩ হেক্টর ফসলি জমি শিলাবৃষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে ।

সোমবার বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু হোসেন।

কৃষি কর্মকর্তা আবু হোসেন বলেন, ‘তিন উপজেলায় রোববার থেকে মাঠপর্যায়ে কাজ করে শিলাবৃষ্টিতে এমন ক্ষতির পরিমাণ পাওয়া গেছে। কিন্তু কতগুলো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং উৎপাদিত ফসলের ক্ষতি কী পরিমাণ হয়েছে তা জানতে আমাদের কাজ চলমান। দু-একদিনের মধ্যে আমরা সে তথ্যও জানাতে পারবো।’

জেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে জেলার তিন উপজেলায় ফসলি জমির ক্ষতির হিসাব।

পীরগঞ্জ

পীরগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কমবেশি শিলাবৃষ্টির প্রকোপ ছিল। উপজেলায় চলতি মৌসুমে ভূট্টা (রবি) চাষ করা হয়েছিল ৫৮০০ হেক্টর জমিতে। শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৭০ হেক্টর জমি।

ভূট্টা খরিপ/১ জাত চাষ হয়েছিলো ৫৬৮ হেক্টর জমিতে। শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে ৬০ হেক্টর জমি। শাকসবজি চাষ করা হয়েছিল ১০৭৮ হেক্টর জমিতে, ক্ষতি হয়েছে ৫০ হেক্টর জমি। বোরো ধান চাষ হয়েছিল ১১৬২০ হেক্টর জমিতে, ক্ষতি হয়েছে ১৫০ হেক্টর জমি।

আম বাগান ১২০০ হেক্টর, ক্ষতি হয়েছে ১৫০ হেক্টর জমি। লিচু বাগান ১২৫ হেক্টর, ক্ষতি হয়েছে ২০ হেক্টর জমি। মাল্টা বাগান ৩৮ হেক্টর, ক্ষতি হয়েছে ৫ হেক্টর জমি। তরমুজ রবি চাষ হয় ১১৯ হেক্টর জমিতে, ক্ষতি হয় ১০ হেক্টর জমি। তরমুজ খরিপ/১ চাষ হয় ৮ হেক্টর জমিতে, ক্ষতি হয় ২ হেক্টর জমি। এছাড়াও কলা চাষ হয় ৩৪ হেক্টর জমিতে, শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতি হয় ৪ হেক্টর জমি।

রানীশংকৈল

এই উপজেলার নেকমরদ, বাচোর, কাশিপুর, বাচোর, রাতোর, লেহেম্বাতে শিলা বৃষ্টির তীব্রতা ছিল বেশি। উপজেলায় মোট ৪৮৫০ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ হয়। শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয় ৮৫০ হেক্টর জমি। বোরো ধান চাষ হয় ৮৩০০ হেক্টর জমিতে, ক্ষতি হয় ৮৮০ হেক্টর জমি।

সবজি চাষ হয় ৭৫০ হেক্টর জমিতে, ক্ষতি হয় ৮৫ হেক্টর জমি। মরিচ চাষ হয় ১৮৫ হেক্টর জমিতে, ক্ষতি হয় ৬০ হেক্টর জমি। আম চাষ হয় ৪৫০ হেক্টর জমিতে, ক্ষতি হয় ৭৭ হেক্টর জমি। লিচু বাগান ৫০ হেক্টর জমি, ক্ষতি হয় ৫ হেক্টর জমি। কলা ২০ হেক্টর জমির মধ্যে ক্ষতি হয় ১ হেক্টর জমি। তরমুজ ১৫ হেক্টর জমির মধ্যে ক্ষতি হয় ৫ হেক্টর জমি।

বালিয়াডাঙ্গী

এই উপজেলার দুওসুও, ভানোর, বড়পলাশবাড়ি, আমজানখোর, বড়বাড়ি, লাহিড়ীসহ আরো কয়েকটি স্থানে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে মোট বোরো ধানের ৭৭৫০ হেক্টর জমির মধ্যে শিলা পড়ে ক্ষতি হয় ২১০ হেক্টর জমি।
মরিচ চাষ হয় ৪৩০ হেক্টর জমি, ক্ষতি হয় ৬০ হেক্টর জমি। ভূট্টার চাষ হয় ৪৫৬০ হেক্টর, ক্ষতি হয় ১৫৮০ হেক্টর জমি। আম বাগান ৪৬১ হেক্টর এর মধ্যে ক্ষতি হয় ১২৫ হেক্টর জমির। লিচু বাগান ৩৫ হেক্টরের মধ্যে ক্ষতি হয় ৫ হেক্টর জমির, শাকসবজি ৩৪৫ হেক্টর জমির মধ্যে ক্ষতি হয় ৭০ হেক্টর জমি। তরমুজ ৪৮ হেক্টর জমির মধ্যে ক্ষতি হয় ১৮ হেক্টর জমির।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা করা হবে কি না জানতে চাইলে কৃষি কর্মকর্তা আবু হোসেন বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নামের তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’