logo
আপডেট : ১২ এপ্রিল, ২০২২ ২০:৫৩
বিবিসির কাছে ধর্ষণের শিকার ইউক্রেনীয় নারীর অভিযোগ
রুশ সেনারা আমাকে ধর্ষণের পর স্বামীকে হত্যা করে

রুশ সেনারা আমাকে ধর্ষণের পর স্বামীকে হত্যা করে

কয়েক দিন আগে রাশিয়ার সৈন্যরা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু যাওয়ার আগে রেখে গেছে যৌন নির্যাতন ও গণহত্যার নির্মমতা।

বিবিসির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ইউক্রেনের এক নারীর ওপর চালানো রাশিয়ার সেনাদের নির্যাতনের কথা।

আন্নার (ছদ্ম) বয়স ৫০ বছর। কিয়েভ থেকে ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে শান্ত এক গ্রামীণ পরিবেশে বাস করতেন।

তিনি বিবিসিকে বলেন, গত ৭ মার্চ তিনি তার স্বামীর সঙ্গে বাড়িতেই ছিলেন। এই সময় এক রুশ সেনা তাদের বাড়িতে ঢোকে। অস্ত্র দেখিয়ে তাকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি খালি বাড়িতে নিয়ে যায়।

তারপর তাকে জামা-কাপড় খুলে ফেলার নির্দেশ দেয়। তা না হলে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে তাকে ধর্ষণ করে ওই রুশ সেনা।

আন্না বলেন, ‘ধর্ষণকারী ওই সেনা তরুণ ও পাতলা গড়নের, হয়তো চেচেন যোদ্ধা। ওই মুহূর্তে আরো চার রুশ সেনা সেখানে ঢুকে পড়ে।’

আন্না ভেবেছিল, তারাও তাকে ধর্ষণ করবে। কিন্তু তারা আসলে ওই সেনাকে নিতে এসেছিল।

ধর্ষণকারী ওই সেনা চলে যাওয়ার পর আনা বাড়িতে ফেরেন। সেখানে এসে দেখেন তার স্বামীর পেটে গুলি করা হয়েছে।

আন্না বলেন, ‘আমার স্বামী আমাকে বাঁচানোর জন্য পেছনে দৌড়ানোর চেষ্টা করেছিল। তাই তাকে গুলি করা হয়। এরপর আমরা দুজন পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিই। কিন্তু গোলাগুলি চলার কারণে আহত স্বামীকে হাসপাতালে নিতে পারিনি। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় দুদিন থাকার পর আমার স্বামীর মৃত্যু হয়।’

আন্না জানান, রুশ যে সেনারা তাকে বাঁচান, তারা কয়েক দিন তাদের বাড়িতেই ছিলেন। তারা চলে যাওয়ার পর বাড়িতে ফিরে মাদক ও ভায়াগ্রা পড়ে থাকতে দেখেন। আন্নার ভাষায়, ‘বেশির ভাগ রুশ সেনা খুনি, ধর্ষক এবং লুটেরা। এদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকই ভালো।’

আন্নার বাড়ির কাছে আরেক নারীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া আরো একটি ঘটনা উঠে আসে বিবিসির অনুসন্ধানে।

আন্নাকে ধর্ষণের আগে ৪০ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। সেটিও ঘটায় আন্নাকে ধর্ষণকারী ওই চেচেন যোদ্ধা।

প্রতিবেশীরা জানান, ওই নারীকে তার বাড়ি থেকে বের করে আনা হয়। তারপর তাকে কাছাকাছি একটি খালি বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। পুরো বাড়িতে ছড়িয়ে ছিল রক্তের দাগ। ঘরের এক কোণে, আয়নাতে লিপস্টিক দিয়ে একটি লেখা ছিল, ‘অপরিচিত কারো হাতে নির্যাতিত ও নিহত এই নারীকে কবর দিয়েছে রুশ সেনারা।’

পরে ইউক্রেনের পুলিশ বাগান থেকে ওই নারীর লাশ তোলে। বিবস্ত্র লাশ। মৃতদেহের গলায় গভীর, লম্বাভাবে কাটা ছিল।