প্রশাসনের বাধা সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) মসজিদ বানিয়ে নামাজ আদায় করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল নারী শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে টিএসসিতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলেদের নামাজের স্থানের পাশে পর্দা টানিয়ে মেয়েদের জন্য নামাজের স্থান তৈরি করছেন একদল শিক্ষার্থী। খবর পেয়ে টিএসসির উপদেষ্টা ড. সিকদার মনোয়ার মুর্শেদ ও পরিচালক সৈয়দ আলী আকবরসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এসে তাদেরকে বাধা দেন। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি চলতে থাকে। পরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের সেখানে নামাজ পড়তে দেখা যায়।
মনোয়ার মুর্শেদ শিক্ষার্থীদের নামাজের স্থানের সমাধানকল্পে ১০ দিন সময় চান কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাতে আপত্তি জানান।
তিনি বলেন, তারা এখানে নিয়মের বাইরে গিয়ে জায়গা নির্ধারণ করে বসেছে। আমরা তাদেরকে অফিসিয়াল প্রসেসের জন্য ১০ দিনের সময় চেয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের কোন কথা শুনছে না। এক্ষেত্রে আমরা এখন এখান থেকে চলে যাচ্ছি, এরপর এখানে তারা কী করবে তার দায়-দায়িত্ব আমরা নেব না।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি, টিএসসিতে ছেলেদের জন্য নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকলেও মেয়েদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ বিভিন্ন কর্মসূচিসহ নানা কারণে নারী শিক্ষার্থীরাও টিএসসিতে অবস্থান করেন।
এ শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী বলে একটি সূত্র দাবি করেছে।
এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধির মোবাইল ফোন ও বিশ্ববিদ্যালয় আইডি কার্ড কেড়ে নেন টিএসসির উপদেষ্টা মনোয়ার মোর্শেদ। পরে সাংবাদিকদের চাপে তা ফেরত দেন তিনি।
এর আগে গত ৫ এপ্রিল দুপুরে টিএসসিতে নামাজের স্থান বরাদ্দের দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী। টিএসসিতে ছেলেদের নামাজের স্থানের পাশে উপযুক্ত একটি খালি জায়গায় সামান্য সংস্কারের মাধ্যমে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজের স্থান প্রস্তুত করা সম্ভব বলেও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়।
বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সেসময় বলেছিলেন, মেয়েদের নামাজের জন্য টিএসসির কোথাও সুযোগ করতে পারলে ভালো হবে। টিএসসি সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য, সেখানে যদি একটু সুযোগ রাখা যায় উত্তম হবে। টিএসসির পরিচালক সাহেবকেও বিষয়টি জানিয়েছি। মেয়েরা যদি নামাজ পড়তে চায়, তাহলে কোথায় একটা পর্দা টানিয়ে দিয়ে সে ব্যবস্থা করা যাবে।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে মত দিতে দেখা গেছে। কেউ বলছেন এটা একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এখানে নামাজের স্থান থাকা উচিত নয়। আবার কেউ বলছেন এখানে সব হতে পারলে এবং ছেলেদের জন্য নামাজের স্থান থাকতে পারলে মেয়েদের জন্য কেন নয়।