কিংবদন্তী চলচ্চিত্র পরিচালক মরহুম আজিজুর রহমান এর মৃত্যুতে দোয়া মাহফিল ও ইফতারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) এফডিসির জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
আজিজুর রহমান ছুটির ঘণ্টা, শেষ উত্তর, লাল কাজল, সম্পানওয়ালা, ঘরে ঘরে যুদ্ধ, ডাক্তার বাড়ি, কথা দাওসহ মোট ৫২টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন।
স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, চিত্রনায়ক আলমগীর, ওমর সানি, আব্দুল লতিফ বাচ্চু, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, শাহিন সুমন, কাজী হায়াৎ, মশিউদ্দিন শাকিলসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনের গুণী শিল্পীরা।
এসময় আজিজুর রহমানের পরিবার ও তার মেয়ে বিন্দিয়া উপস্থিত ছিলেন।
প্রয়াত আজিজুর রহমানকে স্মরণ করে নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, তার কাছে কখনো কোন শিল্পী বিমুখ হয়নি। তিনি সবকিছু সমাধান করতে পারতেন। তার ছবিগুলো দেখলে তার বিচক্ষণতা বোঝা যাবে। তার প্রতিটি ছবি মননশীলতার পরিচয় দেয়। তিনি আমার দেখা পরিচালকের মধ্যে সেরাদের একজন।
কাজী হায়াৎ বলেন, আজিজুর রহমান একজন সম্পূর্ণ শিল্পী ছিলেন। আমি যখন ছাত্রজীবন শেষ করে এফডিসিতে আসি তখনই তার সাথে আমার পরিচয় হয়। তার মাধ্যমে আমি চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। তিনি সেদিন যদি আমাকে সুযোগ করে না দিতেন তাহলে আমার চলচ্চিত্রাঙ্গনে আসা হতো না। তিনি প্রকৃতপক্ষেই একজন ভালো মানুষ। আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।
আজিজুর রহমানের মেয়ে বিন্দিয়া বলেন, আমার বাবা একজন প্রকৃত মানুষ ও পরিপূর্ণ মানুষ ছিলেন, যিনি অনেক পরিশ্রম করে এই পর্যায়ে পৌঁছেছেন। যিনি আমাদের পৃথিবীরতে মাথা উঁচু করে বাঁচার সুযোগ করে দিয়েছেন। কোন কারণে আমাদের ছোট হতে দেননি। খুব সহজ সরল এবং নিরহংকার জীবন যাপন করতেন আমার বাবা।
তিনি বলেন, বাবা ছিলেন কাজ পাগল একজন মানুষ। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তাঁকে দেখেছি কাজের মাঝে ডুবে থাকতে। কখনো টাকার জন্য কাজ করতেন না। উনি বলতেন “আমি টাকার পেছনে ছুটবো না। এত ভালো কাজ করবো যে, টাকা আমার পেছনে ছুটবে।’ আসলেই তাই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম ব্যবসা সফল ছবিগুলো তিনি বানিয়েছেন। তাঁর প্রতিটা ছবি ছিল বক্তব্যধর্মী। এভাবেই তিনি এই জগতে হয়ে উঠেছিলেন একজন কিংবদন্তী। মানুষের মৃত্যুর পর তাঁর কাজ তাঁকে বাচিয়ে রাখে। আমি অনেক গর্ব বোধ করি আমার বাবাকে নিয়ে। তাঁর কাজ তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে আমাদের মাঝে।’’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিন্দিয়া বলেন, চলচ্চিত্র জগতে যারা কাজ করেন, তাদের অনেক শ্রম এবং সময় দিতে হয়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য অনেক কিছু করার চেষ্টা করেছেন আমার বাবা। তিনি তাঁর সারাটা জীবন চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্যয় করেছেন। ব্যাতিক্রমধর্মী গল্প, নিরলস পরিশ্রম আর নতুন প্রযুক্তির ওপর গবেষণা তার ছবিগুলোকে সর্বোচ্চ পর্যায় নিয়ে গেছে।