পহেলা বৈশাখ আজ, বাংলা নববর্ষ-১৪২৯। পহেলা বৈশাখ বাঙালী জাতির হাজার বছরের প্রাণের উৎসব। এই দিনে পুরোনো জীর্ণ অস্তিত্বকে বিদায় দিয়ে আমরা সতেজ-সজীব নবীন এক জীবনকে বরণ করে নিই। বছর ঘুরে আমরা পদাপর্ন করেছি নতুন বছর ১৪২৯-এ।
বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আবার এলো নববর্ষ। নতুন বছরটি আমাদের জীবনে বয়ে আনুক সুখ-শান্তি, সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি।
পহেলা বৈশাখ (বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস বৈশাখের ১ তারিখ) বঙ্গাব্দের প্রথম দিন, তথা বাংলা নববর্ষ। দিনটি বাঙালি জাতির ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণের দিন। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়। ত্রিপুরায় বসবাসরত বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নিয়ে থাকে। সে হিসেবে এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোকউৎসব হিসাবে বিবেচিত।
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে উৎসবে মাতবে সারাদেশ। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার শুধুমাত্র মঙ্গল শোভাযাত্রা পালিত হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা নববর্ষ উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক নিসার হোসেন। নববর্ষকে কেন্দ্র করে কোনোরূপ ভয়-ভীতি না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ উপলক্ষে এক বাণীতে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে সারা বছরের দুঃখ-জরা, মলিনতা ও ব্যর্থতাকে ভুলে সবাইকে নব-আনন্দে জেগে ওঠার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির সম্প্রীতির দিন, বাঙালির মহামিলনের দিন। এদিন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণে, নব-অঙ্গীকারে। সারা বছরের দুঃখ-জরা, মলিনতা ও ব্যর্থতাকে ভুলে সবাইকে আজ নব-আনন্দে জেগে ওঠার উদাত্ত আহ্বান জানাই।
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, বাঙালি জাতির শাশ্বত ঐতিহ্যের প্রধান অঙ্গ পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। তিনি এ উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে জানান শুভ নববর্ষ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির জাতীয় জীবনে পরম আনন্দের দিন। আনন্দঘন এ দিনে তিনি দেশে ও দেশের বাইরে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিকে বাংলা নবর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এ দিনে নতুনের বার্তা নিয়ে আমাদের জীবনে বেজে উঠে বৈশাখের আগমনি গান। দুঃখ, জরা, ব্যর্থতা ও মলিনতাকে ভুলে সবাই জেগে ওঠে মহানন্দে। বাঙালি জাতির শাশ্বত ঐতিহ্যের প্রধান অঙ্গ পয়লা বৈশাখ। ফসলি সন হিসেবে মোঘল আমলে যে বর্ষ গণনার সূচনা হয়েছিল, সময়ের পরিক্রমায় তা আজ সমগ্র বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে। পহেলা বৈশাখের মাঝে বাঙালি খুঁজে পায় নিজস্ব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও চেতনার স্বরূপ।