logo
আপডেট : ১৪ এপ্রিল, ২০২২ ১৪:১৫
এবারও হচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলা!
রুবেল খান, চট্টগ্রাম

এবারও হচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলা!

জব্বারের বলী খেলা (ফাইল ছবি)

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলায় গত দু’বছর লেগেছিল করোনার থাবা! করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের শংকায় বাতিল করা হয় ঐতিহ্যবাহী এই জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা। এ কারণে গত দু’বছর ১২ বৈশাখ নগরীর ঐতিহাসিক লালদীঘির ময়দানে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১১তম ও ১১২তম আসরের আয়োজন করার সুযোগ হয়নি।

গত দু’বছরের মতো এবারও হচ্ছে না চট্টগ্রামের শতবছরের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলা! তাই এবারও হচ্ছে না তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলাও। যদিও এবার করোনার মহামারির প্রকোপ কম, তারপরও মাঠ নিয়ে জটিলতাসহ নানা কারণে আয়োজন করা যাচ্ছে না চট্টগ্রামের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১৩তম আসর।

যদিও আয়োজকদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি এখনও। তবে তৃতীয়বারের মতো ঐতিহ্যবাহী এই জব্বারের বলী খেলার আয়োজন যে হচ্ছে না, তা অনেকটাই নিশ্চিত। এর মূল কারণ হিসেবে জানা গেছে যে ঐতিহাসিক লালদীঘির ময়দানে আয়োজন করা হয় এই ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলা, সেই লালদীঘির ময়দানটিতে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত না করা পর্যন্ত এখানে খেলা বা মেলার আয়োজন করা যাবে না।

এই লালদীঘি ময়দানে বাঙালীর মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দুই বছর আগে লালদীঘি মাঠে ঐতিহাসিক ছয় দফার স্মৃতি সংরক্ষণে একটি প্রকল্প হাতে নেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। এরপর বদলে যায় ময়দানের রূপ। গত বছরের মার্চে এই ময়দানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা ছিল। তবে এখন পর্যন্ত উদ্বোধন করা হয়নি। উদ্বোধন না হওয়ায় এই লালদীঘি ময়দানটি এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি।

এ প্রসঙ্গে আবদুল জব্বারের বলী খেলা ও মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী বলেন, ‘বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রতিবারের মতো এবারও ১২ বৈশাখ নগরীর ঐতিহাসিক লালদীঘির ময়দানে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১৩তম আসরের আয়োজন করার কথা ছিল। কিন্তু লালদীঘি ময়দানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলে তো এখানে জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করতে পারব না।’

প্রসঙ্গত. ১৯০৯ সালে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে লড়তে দেশের তরুণ যুবকদের শারীরিকভাবে তৈরি করতে চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার বাসিন্দা আবদুল জব্বার এই বলী খেলার প্রচলন করেছিলেন। নগরীর লালদীঘি ময়দানে আয়োজিত এই জব্বারের বলী খেলা প্রথম থেকেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে।

এই বলী খেলাকে ঘিরে লালদীঘির বিশাল এলাকাজুড়ে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলাও। যে মেলায় দেশের দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন কুটির ও লোকজ সামগ্রীর পসরা নিয়ে মেলায় হাজির হন ব্যবসায়ীরা। শুরু থেকেই গৃহস্থালী কাজে ব্যবহৃত সব জিনিসপত্রই পাওয়া যেত এই মেলায়। সেই ধারাবাহিকতা এখনও অটুট রয়েছে। শত বছরের গণ্ডী পেরিয়ে জব্বারের এই বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা বর্তমানে দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ঐতিহ্যবাহী লোকজ উৎসবেই শুধু পরিণত হয়নি, ঠাঁই করে নিয়েছে ইতিহাসেও।