logo
আপডেট : ১৪ এপ্রিল, ২০২২ ১৬:৩২
বাবার কোলে থাকা শিশুকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আটক ৩
নোয়াখালী প্রতিনিধি

বাবার কোলে থাকা শিশুকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আটক ৩

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাবার কোলে থাকা শিশু নিহতের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত বেগমগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জের একাধিকস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামের মৃত নুরনবীর ছেলে এমাম হোসেন ওরফে স্বপন (৩০), লফিতপুর চৌধুরী মাস্টার বাড়ির সামছুদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিন বাবার (২৩) ও লফিতপুর গ্রামের ছাদেক মেম্বারের পুরান বাড়ির দেলেয়োর হোসেনের ছেলে দাউদ হোসেন রবিন (১৭)

আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বেগমগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে শিশু নিহতের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।

আরো পড়ুনঃ বাবার কোলে থাকা শিশুকে গুলি করে হত্যা

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় ১৬ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি এবং ১০-১২জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এ দিকে বৃহস্পতিবার সকালে শিশু তাসফিয়ার লাশ ঢাকা থেকে বেগমগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত শিশুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। তাসফিয়ার বাবা আবু জাহের বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে বেগমগঞ্জের হাজীপুর গ্রামের মালেকার বাপের দোকান নামক স্থানে মাওলানা আবু জাহের (৩৭) ও তার কোলে থাকা ৩ বছরের শিশু তাসফিয়া আক্তার ওরফে জান্নাতকে স্থানীয় রিমন বাহিনীর সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর পিতা সৌদি প্রবাসী মাওলানা আবু জাহেরও (৩৭) গুলিবিদ্ধ হন।

মাওলানা আবু জাহের ওই এলাকার রাসাদ মিয়ার বাড়ির মৃত জানু সরদারের ছেলে।

অভিযুক্ত রিমন (২৫) একই উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামের দানিজ বেপারী বাড়ির মমিন উল্যার ছেলে। রিমন এলাকার চিহিৃত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পূর্ব-বিরোধের জেরে একই উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা মো. রিমনের নেতৃত্বে ৫-৬ জন বুধবার বিকেল হাজীপুর গ্রামের মালেকার বাপের দোকান এলাকার মো. মামুনের মুদিদোকানে হানা দেয়। এ সময় মামুনের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়।

এ সময় নিজের সন্তানকে কোলে নিয়ে এগিয়ে আসেন মামুনের মামা সৌদি প্রবাসী মাওলানা আবু জাহের। তিনি প্রতিবাদ করলে রিমন ও তার সহযোগীরা প্রথমে মামুনকে, পরে আবু জাহেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।

গুলির ঘটনায় মামুন অল্পের জন্য রক্ষা পেলেও তার মামা আবু জাহেরের শরীরে ও তার কোলে থাকা মেয়ে জান্নাতুলের মাথা এবং মুখমণ্ডলে গুলি লাগে। এরপর সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ ঘটনার পর আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে গুলিবিদ্ধ আবু জাহের ও তার মেয়েকে উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এরপর সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে রাত ৮টার শিশু জান্নাতুল মারা যায়।