ইউনিয়ন পরিষদের অবসরপ্রাপ্ত ১৪৬ জন সচিবের প্রায় ১০ কোটি টাকা বকেয়া আনুতোষিক এবং তাদেরকে সরকারি কর্মচারীদের ন্যায় নিয়মিত উৎসব ভাতা প্রদানের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এ নোটিশ দিয়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ৩০ জনকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. ইউসুফ ভূঁইয়াসহ ১৪৬ জন অবসরপ্রাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের পক্ষে এই নোটিশ দেয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, নোটিশ প্রেরণকারী ইউনিয়ন পরিষদের সচিবগণ অবসর গ্রহণকালে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গ্রস পেনশনের ৫০% বাধ্যতামূলক সমর্পণ করে তার বিপরীতে আনুতোষিক পেয়েছেন।
কিন্তু গ্রস পেনশনের বাকি ৫০% সমর্পণ করা সত্ত্বেও কোনো ধরনের আনুতোষিক পাননি। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সমর্পিত বাকি ৫০% এর বিপরীতে তারা উক্ত টাকার অর্ধেক হারে এককালীন আনুতোষিক প্রাপ্য হবেন।
কিন্তু কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই তাদের বাকি আনুতোষিক আটকে দিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যাহা শুধু বেআইনি নয় বরং অবসরপ্রাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং বৈষম্যমূলক।
২০১১ সালের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) কর্মচারী চাকুরী বিধিমালা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিবগণ পরিষদের নিজস্ব কর্মচারী।
বিধিমালা অনুযায়ী যেহেতু তারা অন্যান্য সরকারি কর্মচারীর ন্যায় মাসিক পেনশন এর আওতাভুক্ত নয় সেহেতু গ্রস পেনশনের সমস্ত টাকা সরকারের নিকট সমর্পণ করে গ্রস পেনশনের সমুদয় পরিমাণ থেকে মোট ৭৫% এককালীন আনুতোষিক পাওয়ার বিধান রয়েছে।
এ ছাড়া ২০১১ সালের বিধিমালা অনুযায়ী তাদেরকে জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন-ভাতা প্রদান এবং উৎসব ভাতা দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তাদের সম্পূর্ণ আনুতোষিক প্রদানে অস্বীকৃতি এবং কোনো ধরনের উৎসবভাতা প্রদান না করা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এ ছাড়া ১৯৯৪ সালের ইউনিয়ন পরিষদ কর্মচারী (ভবিষ্যত তহবিল এবং আনুতোষিক) বিধিমালা অনুযায়ী সচিবগণ সরকারি কর্মচারীর ন্যায় পেনশন, আনুতোষিক এবং উৎসবভাতা পাওয়ার হকদার।
আইনের সুস্পষ্ট বিধান থাকা সত্ত্বেও অবসরপ্রাপ্ত সচিবদেরকে সম্পূর্ণ আনুতোষিক এবং কোনো প্রকার উৎসবভাতা প্রদান না করা বেআইনি, নিপীড়নমূলক এবং অযৌক্তিক।
আনুতোষিক এবং উৎসবভাতা প্রাপ্তি একজন সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারির ন্যয্য অধিকার যা থেকে কোনোভাবেই তাকে বঞ্চিত করা যাবে না।
এসব আইনি যুক্তি তুলে ধরে নোটিশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।