ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস যথাযথ সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে উদযাপন করেছে ব্রুনাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশন। গতকাল রোববার (১৭ এপ্রিল) সকালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠান হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন এবং ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করা হয়।
মুজিবনগর দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য উপস্থিত সবার কাছে তুলে ধরেন বাংলাদেশের হাই কমিশনার নাহিদা রহমান সুমনা। তিনি তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং চার জাতীয় নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ মনসুর আলী এবং আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিকদার রাশেদ কামাল এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্য এ কে জসীম উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
দিবসটি উপলক্ষে এদিন সন্ধ্যায় ব্রুনাই হোটেলে আরেকটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে বাংলাদেশ হাই কমিশন। এতে উপস্থিত ছিলেন ব্রুনাইয়ের অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াং বেরহরমাত আহমাদ ইসা, ব্রুনাই লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস্য ইয়াং বেরহরমাত খাইরুন্নেসা আশারি এবং ভারত, ফ্রান্স, কম্বোডিয়া, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, ইরান, ভিয়েতনাম ও মালায়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত ও রাশিয়ার চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স। ছিলেন ব্রুনাইয়ের এনজিও নেতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
তাদের সবাইকে মুজিবনগর দিবসের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও ঘটনাবলী সম্পর্কিত একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয় অনুষ্ঠানে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশ হাই কমিশনার তার বক্তব্যে বলেন, মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠন, শপথ গ্রহণ ও কার্যক্রম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও অসীম সাহসিকতাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল চালিকা শক্তি। সমগ্র বাঙালি জাতিকে বাঙালি জাতীয়তাবোধ এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের চেতনায় অনুপ্রাণিত ও একতাবদ্ধ করে নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে শক্তিশালী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে যে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়েছিল, সেই মহান কীর্তিগাঁথার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
হাই কমিশনার নাহিদা রহমান সুমনা বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছরে বাংলাদেশের প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ আজ এক রোল মডেল। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, এনার্জি ও তথ্যপ্রযুক্তিসহ আরো অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারই বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে সামিল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশের হাই কমিশনার।
অনুষ্ঠানে ইফতারের আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ, চার জাতীয় নেতা ও শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে এবং বাংলাদেশের উত্তরোত্তর কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।