বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চলাচল বাড়ছে। এতে ছিনতাই, ইভটিজিং করাসহ বড় ধরনের ঝুঁকি বাড়ছে। দীর্ঘদিন ধরেই ক্যাম্পাসে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চলাচলের অভিযোগ উঠলেও প্রতিকার পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। এমনকি কর্তৃপক্ষও বেপরোয়া যান চলাচল রোধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষকদের অভিযোগ, গাড়ি চলাচলে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। ফলে পরিবার নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রায়ই উত্ত্যেক্তের শিকার হচ্ছেন তারা। বেরোবির অ্যাকাডেমিক ভবন রাস্তা সংলগ্ন হওয়ায় উচ্চ শব্দে হর্ন বাজিয়ে চলাচল করায় যানবাহনের শব্দে ক্লাসের ব্যাঘাত ঘটে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ই ক্লাসের মনোযোগ হারান। তবে গাড়ি চলাচলে কঠোর নিয়মাবলীর মাধ্যমে বেপরোয়া গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বহিরাগতরা অবাধে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে ছিনতাই ও উত্ত্যক্ত করা, মাদকসেবনসহ নানা অপকর্ম করে মোটরসাইকেলযোগে দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ ছাড়া অনেকে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালায়, যা ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করে।
বেশ কয়েকজন ছাত্রী অভিযোগ করে জানায়, তারা হরহামেশায় মোটরসাইকেল আরোহীদের দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হন। ইভটিজিং করেই দ্রুত মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সক্ষম হন তারা।
বেরোবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘উচ্চস্বরে হর্ণ বাজানোর কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশের জন্য মাদকদ্রব্যও ক্যাম্পাসে আসছে। সন্ধ্যার পর নিয়মিত ক্যাম্পাসে বেশকিছু স্থানে চলে মাদকসেবন।
‘শুধু তাই নয় বহিরাগতরা প্রতিনিয়তই ক্যাম্পাসে বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি করছে। একইসঙ্গে দুর্ঘটনা এড়াতে ও শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ খুবই দরকার।’
জানা গেছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যানবাহনে স্টিকার ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারপরেও অনেকে স্টিকার ব্যবহার না করার কারণে এর সুযোগ নিচ্ছে বহিরাগতরা। অবাধ প্রবেশ ও বেপরোয়া যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের ব্যক্তিগত গাড়ি শনাক্তকরণেও প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশেষ দিনগুলোতে ক্যাম্পাসে বহিরাগত মোটরসাইকেল আরোহীদের সংখ্যা বেড়ে যায়। তারা অবাধে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে নারী শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করে মটরসাইকেলযোগে দ্রুত সটকে পড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, ‘এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। বহিরাগতরাই মোটরসাইকেল ব্যবহার করে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে। প্রক্টরিয়াল বডি নিয়ে আমি প্রায়ই ক্যাম্পাসে অভিযান পরিচালনা করি। সম্প্রতি বহিরাগত কয়েকজনকে আটকের পর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপসহ বেপরোয়া যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’